বর্তমানে চীন থেকে খুব কম পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। করোনাভাইরাসের কারণে যদি চীন থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধও হয়ে যায়, তাহলে পেঁয়াজের বাজারে প্রভাব পড়বে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন টিপু মুনশি। এ সময় বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন উপস্থিত ছিলেন। এর আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই মুহূর্তে দেশের বাইরে থেকে যে পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে তার মাত্র ১০ থেকে ১৫ শতাংশ চীন থেকে আসছে। চীনের পেঁয়াজ আমাদের দেশের মানুষ পছন্দ করে না। চীন থেকে আমদানি বন্ধ হলেও পেঁয়াজের বাজারে প্রভাব পড়বে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে বিদেশ থেকে প্রায় ২ হাজার টন পেঁয়াজ ঢুকছে। এর মধ্যে ৫০ শতাংশ আমদানি হচ্ছে মিয়ানমার থেকে। পাকিস্তান থেকে আসছে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ। এছাড়া তুরস্ক থেকেও আসছে, আর চীন থেকে খুব কম পরিমাণ আসছে। সুতরাং চীন থেকে বন্ধ হলেও সমস্যা হবে না।’
টিপু মুনশি বলেন, ‘পেঁয়াজ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। পেঁয়াজ আমদানির ওপর নির্ভরশীল না থেকে চাহিদা মোতাবেক উৎপাদন করে এ সমস্যার সমাধান করা হবে। পেঁয়াজের উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিত করা গেলে কৃষকরা পেঁয়াজ উৎপাদনে উৎসাহিত হবেন।’
তিনি বলেন, ‘আগামী তিন বছরের মধ্যে দেশের চাহিদা মিটিয়ে পেঁয়াজ রফতানি করা সম্ভব হবে। পেঁয়াজ উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি এর উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিতকরণ ও পেঁয়াজ সংরক্ষণের বিষয়ে সরকার চিন্তা করছে।’
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতি বছর দেশের চাহিদা মেটাতে ৮ থেকে ৯ লাখ টন পেঁয়াজ ভারত থেকে আমদানি করা হতো। কিন্তু ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয়ায় সমস্যা হয়েছে। পরে বাংলাদেশ মিয়ানমার, মিসর, তুরস্ক, পাকিস্তান, চীন থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে চাহিদা পূরণ করছে। এখনও পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘পেঁয়াজ নিয়ে যাতে কেউ কারসাজি করতে না পারে, সে বিষয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গহণ করা হবে। আশা করি, আগামীতে এ ধরনের কোনো সমস্যা হবে না। দেশের কৃষকরা পেঁয়াজের মূল্য বেশি পাওয়ার কারণে ইতোমধ্যে উৎপাদন বাড়াতে শুরু করেছেন। পেঁয়াজ সমস্যা সমাধানের জন্য উৎপাদন বৃদ্ধি এবং উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিত করার বিকল্প নেই। কৃষি মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে কাজ করছে। এক সময় গরু আমদানি করে কোরবানির ঈদের চাহিদা পূরণ করা হতো। সরকারের গৃহীত বিশেষ উদ্যোগের কারণে আজ বাংলাদেশ গরুর মাংসে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এখন আর কোরবানির জন্য গরু আমদানি করতে হয় না।’