পুঁজিবাজারে আবারো ছন্দপতন
২৭ দিনে সূচক কমেছে মোট ৫১৭ পয়েন্ট
দীর্ঘদিনের মন্দা কাটিয়ে এ বছরের জুন থেকে দেশের পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রবণতা দেখা যায়। এ সময় টানা তিন মাস ঊর্ধ্বমুখী অবস্থানে ছিলো সূচক। তবে গত সেপ্টেম্বর থেকেই আবারো ছন্দপতন ঘটে পুঁজিবাজারে। গত ২৭ দিনে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স ৫১৭ পয়েন্ট হারিয়েছে। সূচকের পাশাপাশি এ সময়ে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে।
গত ২৮ মে ডিএসইএক্স সূচক এক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ৪ হাজার ৬১৫ পয়েন্টে নেমে আসে। সেখান থেকে সূচকটি ঘুরে দাঁড়ায় এবং গত ৭ সেপ্টেম্বর ৫ হাজার ৬৩৬ পয়েন্টে দাঁড়ায়। এ সময়ে সূচকে যোগ হয় ১ হাজার ২১ পয়েন্ট। তবে এর পর থেকেই আবারো নিম্নমুখিতার মধ্যে পড়ে পুঁজিবাজার। সর্বশেষ গত সপ্তাহ শেষে ৫ হাজার ১১৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে ডিএসইএক্স সূচক। গত ৮ সেপ্টেম্বর থেকে ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত ২৭ কার্যদিবসে ৫১৭ পয়েন্ট হারিয়েছে সূচকটি।
সূচকের পাশাপাশি এ সময়ে পুঁজিবাজারে লেনদেনের পরিমাণও উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। গত সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ ছিলো ১ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। যেটি গত সপ্তাহ শেষে ৫২২ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। খাতভিত্তিক পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ছয় সপ্তাহে ব্যাংক, ওষুধ ও রসায়ন, টেলিযোগাযোগ, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, প্রকৌশল এবং খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের বড় মূলধন কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর ও লেনদেন অধিকাংশ সময়েই ছিলো নিম্নমুখী। এ খাতগুলোর শেয়ারের নিম্নমুখিতার সার্বিক প্রভাব পড়েছে পুঁজিবাজারেও।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়েছিলো। যার প্রভাবে পুঁজিবাজারের সূচকেও ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তবে শরিয়াহভিত্তিক দুর্বল ৫ ব্যাংককে একীভূত করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে সেটির কারণে ব্যাংক খাতের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহে ভাটা পড়েছে। একীভূতকরণ প্রক্রিয়ায় পাঁচ ব্যাংকের বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ কীভাবে সংরক্ষণ করা হবে সে বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট নির্দেশনা না থাকার ফলে এ নিয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি দুর্বল ৯ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিলের উদ্যোগটিও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শঙ্কা তৈরি করেছে। শেয়ারহোল্ডার হিসেবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লোকসানের দায় শেষ পর্যন্ত তাদেরই বহন করতে হবে এমন ধারণার কারণে এসব শেয়ারে বিনিয়োগ করা অর্থ ফেরত পাওয়ার বিষয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। যা সার্বিকভাবে পুঁজিবাজারেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করছেন তারা।
এন এস


