ভালো ঘুমের চাবিকাঠিই সঠিক বালিশ নির্বাচন

ঘুম ভালো না হলে শরীর ও মন দুই-ই ক্লান্ত হয়ে পড়ে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘুমের ব্যাঘাত ঘটার অন্যতম কারণ হতে পারে ভুল বালিশ নির্বাচন। সঠিক উচ্চতা বা বালিশ ঠিকঠাক আরামদায়ক না হলে ঘুম ব্যাহত হয়। আর দীর্ঘদিন এভাবে চললে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও খারাপ প্রভাব পড়ে।

কেন সঠিক বালিশ এত গুরুত্বপূর্ণ:

জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক ড. গীত পল বলছেন, একটি বালিশের কাজ হলো মাথা ও ঘাড়কে মেরুদণ্ডের সঙ্গে সরল রেখায় রাখা। কিন্তু অনেকে কেবল নরম বা শক্ত বিবেচনায় বালিশ বেছে নেন, যা মেরুদণ্ডে প্রভাব ফেলে।

বালিশ নির্বাচন মূলত নির্ভর করে আপনি কোন ভঙ্গিতে ঘুমান তার ওপর।

চিৎ হয়ে শোয়া ব্যক্তিদের জন্য:

ঘুমোনোর সময় ঘাড় যেন সামনের দিকে না ঝুঁকে যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। খুব উঁচু বা শক্ত বালিশ ব্যবহার করা ঠিক নয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, চিবুক ও বুকে অন্তত চার আঙুলের ফাঁকা থাকতে হবে। এছাড়া হাঁটুর নিচে একটি বালিশ বা রোল করা তোয়ালে রাখলে কোমরের চাপ কমে।

পাশ ফিরে শোয়া ব্যক্তিদের জন্য:

মাথা ও ঘাড়কে মেরুদণ্ডের সমান উচ্চতায় রাখতে হবে। এজন্য মাঝারি শক্ত বালিশ ভালো। কোমর ও পিঠের সঠিক সমান্তরাল বজায় রাখতে হাঁটুর মাঝেও একটি বালিশ রাখা যেতে পারে।

উপুড় হয়ে শোয়া ব্যক্তিদের জন্য:

এই ভঙ্গি এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। কারণ এতে ঘাড় ও পিঠে টান পড়ে। যদি অভ্যাস ছাড়তে না পারেন, তাহলে খুব পাতলা বালিশ মাথা ও পেটের নিচে রাখতে পারেন যাতে মেরুদণ্ডে চাপ কম পড়ে।

বালিশ কতদিন পর বদলাবেন:

একই বালিশ দীর্ঘদিন ব্যবহার করা ঠিক নয়। প্রতি ১-২ বছর অন্তর নতুন বালিশ নেয়া উচিত। বালিশ যদি দলা পাকিয়ে যায়, আকৃতি নষ্ট হয় বা ঘুম থেকে উঠে ঘাড়ে ব্যথা লাগে, তাহলে বুঝতে হবে বালিশ বদলানোর সময় এসেছে।

পরীক্ষা করতে পারেন সহজ এক উপায়ে — বালিশটি মাঝ থেকে ভাঁজ করুন, যদি হাত ছাড়ার পর আগের মতো হয়ে যায়, তাহলে এখনো ব্যবহারযোগ্য। যদি আগের মতো না হয়, তাহলে নতুন বালিশ কিনুন।

শুধু বালিশ নয়, ঘুমের ভঙ্গিও গুরুত্বপূর্ণ:

যদি ঘাড় ও পিঠের ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয়, শুধু বালিশ নয়—আপনার ঘুমের ভঙ্গি বা বিছানাও দায়ী হতে পারে। অনেকেই সব ধরনের বালিশ বদলে দেখেন, কিন্তু আসল সমস্যা থাকে ঘুমের অভ্যাসে।

              #আফেই

সম্পর্কিত খবর