আমলা থেকে রাজনীতিতে আসার সবুজ সংকেত
আ’লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন সাবেক সচিব মেজবাহ

ভোলা-৪ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী এলাকায় দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন। এবার ভোলা-৪ আসনে আসনে নির্বাচনী মাঠে নতুন মুখের কথা শোনা যাচ্ছে। আগামী নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী হওয়ার জন্য সবুজ সংকেত পেয়েছেন সাবেক সচিব মেজবাহ উদ্দিন। চরফ্যাশন-মনপুরা এই আসনে আওয়ামীলীগ মনোনয়ন পাওয়ার সবুজ সংকেত পেয়েছেন মেজবাহ উদ্দিন- রাজনীতির মাঠে এই নিয়ে ব্যাপক গুনজন উঠেছে।

১লা জানুয়ারী চাকুরী বয়স ৫৯ বছর হওয়ায় যুব ও ক্রীড়া সচিব থেকে অবসর গ্রহন করেন মেজবাহ উদ্দিন। গত ৪ জানুয়ারী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সাথে দেখা করলে তাকে সরাসরি রাজনীতিতে যোগদান করে ভোলা ৪ আসনে চরফ্যাসন ও মনপুরার সাধারণ মানুষের পাশে দাড়ানোর পরামর্শ দেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। বিষয়টি নির্ভরযোগ্য সুত্রে প্রকাশ।

মেজবাহ উদ্দিন ১২ জানুয়ারি ২০২২ তারিখ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে সচিব পদে যোগদান করেন। তিনি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) প্রশাসন ক্যাডারে ১১ ডিসেম্বর ১৯৯১ খ্রি: যোগদান করেন। কিশোরগঞ্জ জেলায় সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে তিনি তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায় এক বছর এবং ঢাকা মহানগরীর তেজগাঁও সার্কেলে চার বছর দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে তিনি সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে কর্মরত ছিলেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলায় তিন বছর এবং মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় দুই বছর সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নাটোর পৌরসভায় এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে পাবনা জেলায় কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মাননীয় প্রতিমন্ত্রীর একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি জেলা প্রশাসক হিসেবে খুলনা জেলায় দুই বছর এবং চট্টগ্রাম জেলায় তিন বছর সাফল্য ও সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। সরকারি কর্মকান্ডে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানো ও নিশ্চিত করা, ভূমি সংক্রান্ত বিষয়ে ডিজিটাইলেজেশন করায় ২০১৬ সালে দেশের ‘সেরা জেলা প্রশাসক’ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন মেজবাহ উদ্দিন।

তিনি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে যুগ্ম সচিব ও অতিরিক্ত সচিব হিসেবে প্রায় পাঁচ বছর কর্মরত ছিলেন। এ মন্ত্রণালয়ে যোগদানের পূর্বে তিনি সর্বশেষ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পদে কর্মরত ছিলেন।

তাঁর নিজ জেলা ভোলা। তাঁর পিতা মরহুম হাফেজ মৌলানা মোঃ বজলুর রহমান এবং মাতা মরহুম সাবেরা খাতুন। ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার মির্জা গালিব উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ভোলা সরকারী কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। তিনি ১৯৮৬ সালে কৃষি বিষয়ে বিএসসি (অনার্স) ডিগ্রি এবং পরবর্তীতে ২০০৯ সনে ইসলামিক ইতিহাসে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। এছাড়াও তিনি সরকারী দায়িত্বের অংশ হিসাবে দেশে-বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান হতে পেশাগত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও সেমিনারে অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি ভারতের উত্তরাখন্ড প্রদেশের মুসৌরীতে অবস্থিত ন্যাশনাল সেন্টার ফর গুড গভর্নেন্স হতে উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এছাড়াও তিনি দক্ষতা উন্নয়নের জন্য আমেরিকার ডিউক ইউনিভার্সিটি হতে উন্নত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। তিনি সরকারী দায়িত্বের অংশ হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়া, হংকং, আমেরিকা, ভারতসহ বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছেন।

মেজবাহ উদ্দিন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসাবে পদাধিকার বলে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান, বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশনের ভাইস-চেয়ারম্যান, শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের নির্বাহী কাউন্সিলের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপির) পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া তিনি ঢাকা অফিসার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক। তিনি ১১তম বিসিএস অফিসার্স ফোরামের সভাপতি এবং বাংলাদেশ এ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

তাঁর স্ত্রী মিসেস ইশরাত জাহান একজন আদর্শ গৃহিণী। তাঁর একমাত্র কন্যা মাশিয়াত মুবাশশিরা রোদশী ‘ও’ লেভেল সম্পন্ন করে এখন ‘এ’ লেভেলে অধ্যয়নরত।
ভোলার চরফ্যাসনে তার বাবার নামে আলহাজ্ব মৌলভী বজলুর রহমান হাফেজিয়া মাদরাসা ও এতিম খানা ও মায়ের নামে সাবেরা ফাউন্ডেশন প্রতিস্টা করে গৃহ নির্মান, শীতার্তদের মাঝে শীত বস্র বিতরন সহ বিভিন্ন সমাজসেবা মুলক কাজ করে বেশ সুনাম অর্জন করেন। চরফ্যাসন মনপুরার বিভিন্ন পদে প্রায় ৫ হাজার বেকার যুবকের চাকরী প্রদান বেশ সুনাম অর্জন করেন।দক্ষিন আইচায় তার মায়ের নামে সাবেরা খাতুন নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষঠা করে চরাঞ্চলে নারি শিক্ষা প্রসার ঘটাচ্ছেন। চরফ্যাসন মনপুরার অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও ভুক্তি করেন। তারসহযোগিতার কারনে শত শত বেকার শিক্ষদের কর্মসংস্থা হয়েছে।
তিনি চট্রগ্রামের জেলা প্রসাশক থাকতে ভোলা সমিতি চট্রগ্রামের নামে স্থায়ী জমি বরাদ্ধ দিয়ে ভবন তৈরী করে ভোলাবাসীর প্রানে ঠাই করে নেন।
এ ছাড়া তিনি অফিসার্স ক্লাব ঢাকার ২ বারের নির্বাচিত সাধারন সম্পাদক, ভোলা সমিতির উপদেষ্টা, বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার উপদেষ্টা।

তিনি ছাত্রজীবনে শেরে বাংলা নগর কৃষি কলেজ বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি ও ছাত্র সংসদের এজিএস ছিলেন, ভিপি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক কৃষিবিদ আ,ফ,ম বাহাউদ্দীন নাসিম। সৈরাচার এরশাদ আমলে জেল জুলুম ও নানা অত্যাচারের শিকার হন।

সম্প্রতি অবসরে গ্রহণের পর রাজনীতির মাঠে সক্রিয় হচ্ছেন মেজবাহ উদ্দিন। ভোলা ৪ চরফ্যাশন মনপুরা আসনে আওয়ামীলীগ এর মনোনয়ন পাওয়ার সবুজ সংকেত পেয়েছেন- এ নিয়ে ব্যাপক গুনজন রয়েছে।

মেজবাহ উদ্দিন বলেন, আমি রাজনীতি করার লোক। সরকারী চাকুরীতে থাকা অবস্থায় জাতির জনকের আদর্শ ও বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় কাজ করেছি। চাকুরী থেকে অবসর গ্রহনের পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আমাকে কিছু দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। আমি সে লক্ষ্যে কাজ করছি। দেশ নেত্রী যে কাজ দিরেন, আমি সততা ও নিষ্ঠার সাথে তাই পালন করব।