৭ বছর বয়সী মিনতি তার বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। ৪০ বছর পর মিনতিকে স্বজনদের মাঝে নিয়ে এলেন নিয়তি। ৪০ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া মিনতি বেগমকে (৪৭) ফিরে পেয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে মা আনন্দে কেঁদে ফেলেন। বাড়িতে যেন খুশির বন্যা বইছে।
শাহরুখ নয়ন নামের এক তরুণের মাধ্যমে আপনজনদের ফিরে পেলেন ওই মিনতি। জানা যায়, রোববার মিনতির নিজ গ্রাম নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের রানীগ্রামে বাবা-মা এবং স্বজনদের হাতে তুলে দেন শাহরুখ নয়ন। মিনতির বাবার নাম মো. বাছের আলী।
মিনতির ভাই তাছের আলী জানান, তারা চার ভাই-বোন। তাদের মধ্যে মিনতিই ছোট। তার বয়স যখন ৬ বছর তখন চাচাতো ভগিনীপতির সঙ্গে ময়মনসিংহে বেড়াতে যায় সে। একপর্যায়ে স্টেশনে হারিয়ে যায় মিনতি। পরে সেখানকার মসলেম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি তার বাসায় নিয়ে যান। সেখানেই বড় হয় মিনতি। এক সময় তাকে গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকার ব্যবসায়ী বুরহান উদ্দিনের সঙ্গে বিয়ে দেন তিনি। ৪০ বছর পর নিজের হারানো বোনকে খুঁজে পেয়ে খুব খুশি তিনি।
মিনতিকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার পেছনের উদ্যোক্তা শাহরুখ নয়ন জানান, তার বাড়ি উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের মকিমপুর এলাকায়। তিনি একই এলাকার ইউপি সদস্য আলীর ছেলে। ঢাকা কলেজে পড়াশোনা করেন তিনি। এক সময় পরিচয় হয় মিনতির জামাতার সঙ্গে। তার কাছেই শোনেন মিনতির জীবনের গল্প। তখন মিনতির সঙ্গে কথা বলে তিনি জানতে পারেন রাজশাহী জেলার কাছিকাটা গ্রামে তার বাড়ি। এতটুকু ছাড়া মিনতি আর কিছুই বলতে পারেননি।
মিনতি যখন হারিয়ে যায় তখন বৃহত্তর রাজশাহী জেলা ছিল। যেহেতু নিজ উপজেলাতে কাছিকাটা গ্রাম রয়েছে এজন্য শাহরুখ নয়ন কাছিকাটা গ্রামে মিনতির বর্তমান ছবিসহ লিফলেট বিতরণ করেন। এরপর একটি ফোন আসে মিনতির বিষয়ে। মিনতি মোবাইল ফোনে তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং ছোট বেলার কিছু চিহ্ন ও স্মৃতির সূত্র ধরেই আপন ঠিকানার সন্ধান পান তিনি।
মিনতি বেগম বলেন, এত বছর পর সবাইকে কাছে পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত। বেঁচে থাকলে আল্লাহ পাক একদিন আপনজনকে ফিরিয়ে দেন। তরুণ নয়নের কাছে তিনি কৃতজ্ঞ।