মাদ্রাসার ছাদ ধস, শিক্ষকসহ অর্ধশতাধিক ছাত্র আহত

মতলব উত্তর উপজেলায় মাদ্রাসার ফ্লোর ধসে এক শিক্ষকসহ অর্ধশতাধিক মাদ্রাসাছাত্র আহত হয়েছে।
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ফরাযীকান্দি উয়েসীয়া কমপ্লেক্সের অন্তর্ভুক্ত আল-আমিন এতিম খানা মাদ্রাসার দ্বিতীয় তলার ফ্লোর ধসে এক শিক্ষকসহ অর্ধশতাধিক মাদ্রাসাছাত্র আহত হয়েছে। গতকাল শনিবার রাত পৌনে ১০ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
পরে স্থানীয়দের সহায়তায় আহতদের উদ্ধার করে মতলব উত্তর ও দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জানায়, আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের ডিসপ্লেতে অংশ গ্রহণের জন্য ওই মাদ্রাসা ভবনের দোতলার বারান্দায় টিম মিটিং চলাকালীন ফ্লোর ধসে পড়ে। এ সময় ওই মিটিংয়ে থাকা সবাই আহত হন। আহত ১৭ জনকে প্রথমে মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে তার মধ্যে ছয় জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সিয়াম নামে এক ছাত্রের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

অপরদিকে আহত আরও ২৬ জনকে মতলব দক্ষিণ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে আট জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। গুরুতর আহত শিক্ষক মোহাম্মদ হোসেন এখন চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, শিক্ষকসহ মোট ৪৪ জনকে হাসপাতালে নেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১৫ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। অধিকাংশ আহতদের হাত ও পায়ের হাড় ভেঙে গেছে বলে জানা গেছে।

মাদ্রাসার আবাসিক কর্মকর্তা শাহেন শাহ সেলিম বলেন, ‘সাধারণত ওই ভবনটি আমরা ব্যবহার করি না। কিন্তু শিক্ষক মোহাম্মদ হোসেন ভুলক্রমে ছাত্রদের নিয়ে ওই ভবনে মিটিংয়ে বসেছিল। হঠাৎ করে ভাঙচুরের শব্দ পেয়ে আমরা দ্রুত গিয়ে দেখি ছাদ ধসে পড়েছে। তাৎক্ষণিক আহতদেরকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পাঠাই।’

চাঁদপুর ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। এসে আহত কয়েকজনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। সব কার্যক্রম শেষে ওই ভবনটি ব্যবহার না করার জন্য পরামর্শ দিয়েছি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে।’

মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আতাউল করিম মুজাহিদ বলেন, ‘মাদ্রাসার ছাত্ররা মিটিংয়ে বসেছিল। হঠাৎ করেই এ ঘটনা ঘটে। পরে মুহূর্তেই সব এলোমেলো হয়ে যায়।’

এদিকে ঘটনার পর চাঁদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নূরুল আমিন রুহুল, চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মাজেদুর রহমান খান, পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান, মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার, মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসির উদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।