নাজিম একজন মাদকসেবী। পেশায় একজন গাড়ি চালক। বিয়েও করেছেন। মাদকসেবী হওয়ায় তবে এখন তাকে কেউ গাড়ি চালাতে দেয় না। একই অভিযোগ নাজিমের বাবা-মায়ের। নাজিমের ভয়ে বাড়ি ছেড়ে আশ্রয়ন প্রকল্পে গিয়ে থাকেন তারা। এদিকে নাজিম ‘মাদকের টাকা’ জোগাড় করতে ঘরের টিন খুলে বিক্রি করেছেন। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে এলাকায়। এখন ঘরের খুঁটি বিক্রির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ প্রতিবেশীদের।
নাজিম টাঙ্গাইলের মির্জাপুর পৌরসভার ৬নম্বর ওয়ার্ডের বাইমহাটি গ্রামের আবু সাইদ কুলুর ছেলে।
বাবা আবু সাইদ কুলুর দাবি, প্রায় এক লাখ টাকা খরচ করে রঙিন টিন দিয়ে ঘর নির্মাণ করেন। মাদকের টাকার জন্য নাজিম নিয়মিত তাদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালানো শুরু করে। টাকা না দিলে বিভিন্নভাবে হত্যার হুমকি দেয়। এর মধ্যে সরকার থেকে দেওহাটা আশ্রয়ণ প্রকল্পে জমিসহ ঘর দিলে তিনি স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে সেখানে চলে যান। নাজিম স্ত্রীকে নিয়ে এই বাড়িতেই থাকে। গাড়ি চালাতে না পেরে মাদকের টাকা জোগাড় করতে ঘরের বেড়ার টিন খুলে বিক্রি করতে শুরু করে। দুই-একটা করে টিন খুলে বিক্রি করতে থাকে। তিন মাসের মধ্যে ঘরের সকল টিন বিক্রি করে দিয়েছে।
নাজিমের চাচা আমজাদ হোসেন বলেন, ঘরটি ৩৫ হাজার টাকা দাম হয়েছিল। কিন্তু ওর মা বিক্রি করেননি। প্রতিদিন ১/২ ফাইল করে টিন খুলে বিক্রি করতে করতে সব টিন বিক্রি শেষ। নাজিম ও তার স্ত্রী এক সাথে মাদক সেবন করে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
একই অভিযযোগ নাজিমের বড় ভাই সাইফুলেরও। তার ঘরের টিনও খুলে বিক্রি করে দিয়েছে বলে অভিযোগ তার। প্রতিবাদ করলে হত্যার হুমকি দেয় বলে দাবি সাইফুলের।
নাজিমের স্ত্রী নিজের মাদক সেবনের বিষয়টি অস্বীকার করেন। তবে স্বামী নাজিম গাঁজা সেবন করে বলে তিনি জানতে পেরেছেন।
অভিযুক্ত নাজিম বলেন, ‘বাবা-মা তিন ভাইকে অটোরিকশা কিনে দিয়েছেন। আমাকেও একটা অটোরিকশা কিনে দিতে বলেছিলাম। ঘরটি বিক্রি করে একটি অটোরিকশা কিনে দিতে বলেছিলাম। বাবা-মা রাজি হয়নি। টাকার প্রয়োজন হওয়ায় টিন খুলে বিক্রি করেছি।’
মির্জাপুর থানার ওসি শেখ রিজাউল হক অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।
উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. জোবায়ের হোসেন বলেন, মাদক সেবনের প্রমাণ পেলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মধ্যমে তাকে শাস্তি দেওয়া হবে।