বাংলাদেশে নির্মাণ হচ্ছে ‘বাবরি মসজিদ’

পাঁচশত বছরের স্মৃতি বিজড়িত শহীদ বাবরী মসজিদের সেই রক্তস্নাত ইতিহাস ধারণ করে রাজধানীর কেরানীগঞ্জের কলাতিয়ায় জামিয়াতুত তারবিয়াহ মাদরাসা ক্যাম্পাসে “বাবরী মসজিদ” নামে একটি সুবৃহৎ মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহন করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের সভাপতি মাওলানা মামুনুল হক।

আধুনিক নান্দনিকতার সাথে বাবরী মসজিদের আদলে প্রাচীন গম্বুজের মিশেলে তৈরি করা হয়েছে মসজিদটির স্থাপত্য নকশা, যা দর্শককে মনে করিয়ে দিবে বাবরী মসজিদের ইতিহাস আর আগামী প্রজন্মের হৃদয়ে জাগিয়ে তুলবে চেতনার মশাল।

তিন বিঘা জমির উপর নির্মিতব্য ইতিহাসের স্মারক এ মসজিদটির জমি ক্রয় ও নির্মাণব্যয় নির্বাহে ৩১৩ প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ১ লক্ষ টাকা প্রদান স্বাপেক্ষে যে কেউ মসজিদ নির্মাণে অংশ গ্রহণ করতে পারবেন।

আগামী ২৬ শে ফেব্রুয়ারী হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্লামা আহমদ শফী এ মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।

মুঘল সম্রাট জহির উদ্দীন বাবরের আদেশে সেনাপতি মীর বাকি ১৫২৮-২৯ মোতাবেক ৯৩৫ হিজরীবর্ষে ভারতের উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদ জেলার অযোধ্যা শহরে ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদ নির্মাণ করেন। মসজিদ নির্মাণের কয়েক শত বছর পর ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বিজেপি ও এবং তাদের সহযোগী সংগঠনের কর্মীরা প্রায় পাঁচশত বছরের প্রাচীন এই পবিত্র মসজিদটিকে নির্মমভাবে শহীদ করে। হিন্দুদের দাবি বাবরী মসজিদের জমিতে তাদের রাম মন্দির ছিলো। ২০১০ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদের উচ্চ আদালত হিন্দু- মুসলমানের মাঝে মসজিদটি ভাগ করার রায় দেয়। এ রায় নিয়ে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড উচ্চ আদালতে আপীল করলে গত বছরের ৯ নভেম্বর দেশটির সুপ্রিম কোর্ট শহীদ বাবরী মসজিদের জমিতে হিন্দুদের রাম মন্দির নির্মাণের রায় ঘোষণা করে।

মসজিদটি নির্মাণ বিষয়ে মাওলানা মামুনুুল হক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন, বাবরি মসজিদ শহীদ করার পর শায়খুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হকের নেতৃত্বে বাবরি মসজিদ লংমার্চের মাধ্যমে পরিচালিত হয় স্মরণকালের বৃহত্তর আন্দোলন। সে আন্দোলন বাবরী মসজিদ রক্ষায় বিশ্বজনমত গঠনে রাখে বিশাল ভূমিকা। কিন্তু বিশ্বজনমত, ন্যায়-নীতিবোধ এমন কি ন্যূনতম যুক্তিরও কোনো তোয়াক্কা না করে ভারতের সুপ্রীমকোর্ট বাবরী মসজিদকে তার যথাস্থানে হতে বিলুপ্তির নির্দেশ দেয় ।

ইতিহাসের কলংকজনক এ রায় শান্তিকামী বিশ্ববাসীর মনে ঘৃণার জন্ম দেয়। আর মুসলমানদের হৃদয়ে জ্বালিয়ে দেয় ক্ষোভের আগুন। সহ্য করতে পারেনি আল্লাহর ঘর পবিত্র মসজিদের এমন নির্মম শাহাদাত। মুসলিম হৃদয়ে হৃদয়ে উচ্চারিত হয় শপথের বাণী- হাজার বছর পর হলেও আমরা বাবরী মসজিদ পুন:উদ্ধার করব। মুক্ত করব আমাদের পাঁচশত বছরের পবিত্র সিজদাহগাহ। বাবরী মসজিদের গম্বুজ থেকে আবার ধ্বনিত হবে আযানের সুমধুর সূর।