অর্থ সরানোর নতুন গন্তব্যের সন্ধানে বাংলাদেশীরা

উন্নত জীবনের খোঁজে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে স্থায়ীভাবে অভিবাসী হচ্ছেন বাংলাদেশীরা। অর্থ ও সম্পদ পাচারের দুরভিসন্ধিসহ নানা কারণে আইনের নাগাল এড়ানোর তাগিদ থেকেও ঘটছে অনেক স্থায়ী অভিবাসনের ঘটনা। এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশীদের প্রথম পছন্দ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলো। তবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে গত ১০ ডিসেম্বর দেশের এক প্রতিষ্ঠান ও সাত ব্যক্তির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় হঠাৎ করেই বদলে গেছে আগের হিসাব। অনেকে আশঙ্কা করছেন, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য এমনকি ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোয়ও বাংলাদেশী কারো অবৈধ সম্পদ থাকলে তা বাজেয়াপ্ত হতে পারে। এ অবস্থায় অর্থ সরানোর নতুন নিরাপদ গন্তব্য খুঁজতে শুরু করেছেন সম্পদ ব্যবস্থাপকরা।

একাধিক সূত্রের তথ্য বলছে, এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট মহলগুলোয় যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে চুলচেলা বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে এরই মধ্যে যারা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে অর্থ সরিয়েছেন তারা বেশ বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন। সামনে যাদের সরানোর পরিকল্পনা রয়েছে, বিড়ম্বনায় পড়েছেন তারাও। তাদের আশঙ্কার সবচেয়ে বড় কারণ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলোর ঐতিহাসিক ঘনিষ্ঠতা। আইনিসহ দ্বিপক্ষীয় বেশকিছু ইস্যুতে সমঝোতা চুক্তিও রয়েছে দেশগুলোর মধ্যে। যেমন কানাডায়ও মার্কিন যেকোনো আইনি ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের জারি করা যেকোনো গ্রেফতারি পরোয়ানা বা নিষেধাজ্ঞা সেখানেও কার্যকর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অন্য দেশগুলোয়ও এসব কার্যকর হওয়ার অসংখ্য নজির রয়েছে।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা আসার পর পরই দেশের পুঁজিবাজার ও ব্যাংক খাতের লুটেরা হিসেবে সন্দেহভাজন কয়েক ব্যক্তি ইউরোপ-আমেরিকায় থাকা তাদের ধন-সম্পদ তৃতীয় কোনো দেশে সরিয়ে নিতে তত্পর হয়ে উঠেছেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। বাংলাদেশ থেকে সরানো অর্থের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার মধ্যে রয়েছেন তারা। ভবিষ্যতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতা আরো বিস্তৃত হলে তাদের সম্পদের ওপরও আঘাত আসতে পারে বলে তারা ভয় পাচ্ছেন।

তাদের এ ভয় একেবারে অমূলক নয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের ভাষ্যমতে, স্বাভাবিকভাবেই এখন থেকে এসব দেশে বাংলাদেশীদের পাঠানো অর্থ নিয়ে বাড়তি নজরদারি থাকবে। পাশাপাশি দেশের যে প্রতিষ্ঠান ও এর সাবেক-বর্তমান কর্মকর্তাদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ হয়েছে, তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সম্পদের ওপরও যুক্তরাষ্ট্র ও দেশটির মিত্ররা নজরদারি চালাবে।

তবে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার বিষয়ে এখন পর্যন্ত তৃতীয় কোনো দেশের পক্ষ থেকে কোনো ঘোষণা আসেনি। যদিও অতীতের বিভিন্ন ঘটনা পর্যালোচনায় এসব দেশেও এ ঘোষণা কার্যকরের সম্ভাবনাই বেশি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে কানাডার ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার কোনো ঘোষণা দেয়ার প্রয়োজনও নেই। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আইনি সমঝোতার আওতায় সেখানে এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবেই কার্যকর হয়ে যাবে। অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের দেশগুলো এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার বেলায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যুক্তরাষ্ট্রকে অনুসরণ করে আসছে। সামনের দিনগুলোয় বাংলাদেশ থেকে এসব দেশে রক্ষিত অর্থ সরানোর বিষয়টি আইনিভাবে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে বলে ধারণা করছেন অনেকে।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞা মিত্র অন্যান্য দেশে কার্যকর হওয়ার উত্কৃষ্ট উদাহরণ চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী মেং ওয়ানঝু। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তিনি ইরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার ফাঁকফোকর এড়াতে হুয়াওয়ের ব্যবসা সম্পর্কে মার্কিন ব্যাংকগুলোকে মিথ্যা বলেছিলেন। এ অভিযোগে তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে মামলা হওয়ার পর কানাডা তাকে গ্রেফতার করে। তিন বছর ধরে তিনি কানাডার ভ্যাঙ্কুভারে পিতা হুয়াওয়ের প্রতিষ্ঠাতা রেন জেনফেংয়ের মালিকানাধীন একটি বাড়িতে গৃহবন্দি অবস্থায় ছিলেন। এ বছরের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের কূটনীতিকদের মধ্যে আলোচনা ও সমঝোতার পর তিনি মুক্তি পান। কানাডায় তার পিতার বিনিয়োগ ও বাড়ি থাকার পরও মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ও মামলার কারণে তাকে আইনি ঝামেলা পোহাতে হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার তানজীব উল-আলম বলেন, যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে একটি প্রতিষ্ঠান ও কয়েকজন ব্যক্তির ওপর। সুনির্দিষ্টভাবে যারা চিহ্নিত হয়েছেন, এটা তাদের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগতভাবে কার্যকর হবে। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানের নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে এবং তার মিত্র পশ্চিমা দেশগুলোয় র?্যাবের অস্ত্র বা সরঞ্জাম কেনাকাটায় বা আর্থিক লেনদেনের ওপর কঠোর নজরদারি থাকবে। র?্যাব যদি মার্কিন কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে অস্ত্র কিনতে চায় অথবা সেখানকার কোনো ট্রেনিংয়ে আসতে চায়, সেটি আর পারবে না। আবার যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশ যেমন যুক্তরাজ্যও র?্যাবকে খুব নজরদারিতে রাখবে। এ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যাদের ব্যবসা বা যোগাযোগ রয়েছে তারাও এর আওতায় পড়তে পারেন। আবার এ নিষেধাজ্ঞার কারণে দেশের ভাবমূর্তির ওপর প্রভাব পড়বে। সেক্ষেত্রে অন্য বাংলাদেশী যারা সেসব দেশে বিনিয়োগ করেছেন তাদের আত্মবিশ্বাসে কিছুটা চিড় ধরতে পারে। আবার বিদেশী বিনিয়োগকারীরাও নতুন বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চিন্তা করবেন।

একটা সময় পর্যন্ত অর্থ সরানোর নিরাপদ ও জনপ্রিয় গন্তব্য ছিল ইউরোপের দেশ সুইজারল্যান্ড। সারা বিশ্ব থেকেই কর ফাঁকি দিয়ে এবং অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ জায়গা করে নিয়েছিল সুইস ব্যাংকগুলোতে। তবে ক্রমাগত সমালোচনার কারণে সাম্প্রতিক সময়ে সুইজারল্যান্ড এ বিষয়ে কিছুটা কড়াকড়ি আরোপ করেছে। বিভিন্ন দেশ থেকে সুইস ব্যাংকগুলোয় কী পরিমাণ অর্থ সঞ্চিত রয়েছে প্রতি বছরই সে তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে। তাছাড়া অর্থ পাচারের বিষয়ে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তথ্য বিনিময়ও করছে দেশটি। এ কারণে দেশটিতে অর্থ রাখতে আগের মতো স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন না অনেকেই।

সিঙ্গাপুর ও হংকংকেও কেউ কেউ অর্থ সরানোর নিরাপদ গন্তব্য হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। তবে অনেক বেশি আলোচনায় আসায় অনেকেই এখন আর হংকংয়ের ব্যাপারেও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন না। এছাড়া চীনের নিয়ন্ত্রণ ও রাজনৈতিক সংকটের কারণেও অর্থ সরানোর গন্তব্য হিসেবে হংকং থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন।

করস্বর্গ হিসেবে সিঙ্গাপুরের খ্যাতি থাকলেও কভিডের কারণে দেশটিতে মানুষের প্রবেশ ও চলাচলে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। এতে দেশটিতে অর্থ রাখা অনেকেই কভিডকালে ঢুকতে পারেননি। একই অবস্থা কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের দেশগুলোর জন্যও প্রযোজ্য। এ দেশগুলোয়ও কভিডের সময় বাইরে থেকে অনেকেই ঢুকতে পারেননি। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে যারা এসব দেশে অর্থ সরিয়ে থাকেন তাদের মূল উদ্দেশ্যই থাকে, যাতে প্রয়োজন ও সংকটের সময় নিজেদের এসব সম্পদ ভোগ করার পাশাপাশি নিজ দেশে প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি হলে আশ্রয় নেয়া যায়। তাছাড়া উন্নত দেশের শক্তিশালী পাসপোর্ট সুবিধা কাজে লাগিয়ে বিশ্বব্যাপী নির্বিঘ্নে ভ্রমণ সুবিধা ভোগ করার বিষয়টি তো রয়েছেই। কিন্তু কভিডের কারণে ইউরোপ-আমেরিকার মতো উন্নত দেশগুলোয় এসব সুবিধা বাধাগ্রস্ত হওয়ার কারণে এখন অনেকেই অর্থ রাখার জন্য তুলনামূলক আরো নিরাপদ উৎস খুঁজছেন।

পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলোর পরিবর্তে অনেকেই এখন সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) ও তুরস্কের মতো গন্তব্যে অর্থ স্থানান্তরকে নিরাপদ ভাবতে শুরু করেছেন। এর মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইউএইতে বিনিয়োগ কোটায় বাংলাদেশীদের স্থায়ী আবাস গড়ার প্রথা জনপ্রিয় হতে শুরু করেছে কয়েক বছর আগেই। এতে বাড়তি সুযোগ তৈরি করেছে দেশটির সাম্প্রতিক সংযুক্তি আবাসিক ভিসা। বিনিয়োগকারীদের জন্য ২০১৯ সাল থেকে ১০ বছরের আবাসিক ভিসা চালু করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। এ ভিসা পেতে কমপক্ষে ১ কোটি দিরহাম বা ২৩ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করতে হয় দেশটিতে। এটি চালুর পর ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশী বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী ও ব্যাংক পরিচালক দুবাইয়ে গোল্ড কার্ড রেসিডেন্সি ভিসা নিয়েছেন। এমনকি কভিডের সময়েও দেশটিতে বিদেশীদের প্রবেশাধিকার বন্ধ হয়নি। ইউরোপ-আমেরিকার তুলনায় কভিড সংকট অনেকটাই দক্ষতার সঙ্গে সামাল দিতে পেরেছে দেশটি, যা অর্থ সরানোর গন্তব্য হিসেবে ইউএইর আকর্ষণ আরো বাড়িয়েছে।

অন্যদিকে ২০১৮ সালে বিনিয়োগের মাধ্যমে নাগরিকত্ব দেয়ার নিয়ম করে তুরস্ক সরকার। আড়াই লাখ ডলার বিনিয়োগ করে বিশ্বের যেকোনো দেশের নাগরিক তুরস্কের নাগরিক হওয়ার আবেদন করতে পারেন। ভৌগোলিক অবস্থান এবং ধর্মীয় রীতিতে মিল থাকায় বাংলাদেশীরাও দেশটির নাগরিকত্ব নিতে শুরু করেছেন। সূত্র বলছে, গত তিন বছরে অন্তত ২০০ বাংলাদেশী দেশটিতে নাগরিকত্ব পেতে আবেদন করেছেন। আবেদন করা বাংলাদেশীদের মধ্যে রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীই বেশি। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশ ও মালয়েশিয়ায়ও আবেদন করেছেন বাংলাদেশীরা। এদের মধ্যে অনেকেই ব্যবসার নামে বা বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় তৃতীয় দেশ থেকেও টাকা বিনিয়োগ করছে তুরস্কে।

পানামা পেপারস, প্যারাডাইস ও প্যান্ডোরা পেপারসের বদৌলতে বারমুডা, পানামা, কেম্যান আইল্যান্ড, মাল্টার মতো করস্বর্গ খ্যাত দেশগুলোয় শেল কোম্পানি খুলে অর্থ সরানোর ঘটনা সামনে এসেছে। তবে বাস্তবে যতগুলো ঘটনা সামনে এসেছে সেগুলোর তুলনায় এসব করস্বর্গে স্থানান্তরিত অর্থের পরিমাণ অনেক বেশি বলে সন্দেহ করছেন সংশ্লিষ্টরা। অনেকেই ভিন্ন কৌশলে ও বিভিন্ন স্তরে এসব দেশে অর্থ রাখার নতুন উপায় খুঁজছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অর্থ সরানোর বিষয়টি যদি কখনো সামনে আসেও তাহলে এর পেছনে থাকা প্রকৃত ব্যক্তির নাম যাতে জানা না যায়, সেজন্যই নানা স্তরভিত্তিক এ ধরনের কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে।

দেশ থেকে অর্থ পাচার প্রতিরোধে যে কয়েকটি সংস্থা দায়িত্বপ্রাপ্ত তার একটি হলো বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। সংস্থাটির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেশের বাইরে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার ক্ষমতা বিএফআইইউর নেই। এজন্য রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ প্রয়োজন। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ উন্নত বিশ্বের দেশগুলোয় যেসব অর্থ এরই মধ্যে পাচার হয়ে গেছে, কোনো নিষেধাজ্ঞার কারণে বাজেয়াপ্ত হলে সে অর্থ ফেরত আনা খুবই কঠিন কাজ। তবে সরকারের পক্ষ থেকে যদি পাচারকারীদের অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ নেয়া হয়, সেক্ষেত্রে বিএফআইইউর ভূমিকা রাখার সুযোগ আছে।