স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ৬৬ শতাংশ কিশোর-কিশোরী

 

প্রতিদিন ন্যূনতম ১ ঘণ্টা কায়িক শ্রম বা ব্যায়াম না করায় বাংলাদেশের ৬৬ শতাংশ কিশোর-কিশোরী স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এরপরও ন্যূনতম শরীরচর্চা করা কিশোর-কিশোরীদের হারের দিক থেকে সূচকে বাংলাদেশই শীর্ষে। ১৪৬টি দেশে করা জরিপের ভিত্তিতে শুক্রবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরেছে ডব্লিউএইচও।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে কিশোরদের মধ্যে ৬৩ শতাংশ ও কিশোরীদের মধ্যে ৬৯ শতাংশ ন্যূনতম কায়িক শ্রম থেকে দূরে রয়েছে।

কিশোরদের মধ্যে শরীরচর্চার হার বাড়লেও (২০০১ সালে ছিল ৭৩ শতাংশ) এখনও তা উদ্বেগজনক পর্যায়ে রয়েছে। বর্তমানে ক্রিকেটসহ খেলাধুলার ব্যাপক প্রসারের ফলে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। কিশোর-কিশোরীদের ন্যূনতম কায়িক শ্রমের দিক থেকে সূচকে বাংলাদেশের পরেই রয়েছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র।

এদিক থেকে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে ফিলিপাইনের কিশোর (৯৩ শতাংশ) ও দক্ষিণ কোরিয়ার কিশোরীরা (৯৭ শতাংশ)। সম্মিলিতভাবে এ দুই দেশের প্রায় ৯৪ শতাংশ কিশোর-কিশোরী শরীরচর্চা থেকে দূরে।

স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ন্যূনতম শরীরচর্চার অভ্যাস না থাকায় শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিতে রয়েছে বিশ্বের ৮১ শতাংশ কিশোর-কিশোরী। যাদের বয়স ১১ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। তাদের কায়িক শ্রমে অনীহা সৃষ্টির পেছনে রয়েছে প্রযুক্তির ভূমিকা।

প্রতিবেদনের সহ-লেখক লিয়েন রাইলি বলেন, ইলেকট্রনিক বা ডিজিটাল বিপ্লবের ফলে কিশোর-কিশোরীরা আগের তুলনায় কম হাঁটে, কম খেলাধুলা করে, গাড়ি-ঘোড়া কম চালায়।

এক জায়গায় বসে থাকাতেই তাদের বেশি স্বাচ্ছন্দ্য। এছাড়া রয়েছে পড়াশোনার বাড়তি চাপ ও নিরাপত্তাহীনতা। অথচ স্বাভাবিক শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য বাড়ন্ত কিশোর-কিশোরীদের প্রয়োজন ব্যায়াম বা কায়িক পরিশ্রম।

প্রতিবেদনের সহ-লেখক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ফিওনা বুল বলেন, বিশ্বে প্রতি পাঁচ কিশোরের চারজনই কোনো ধরনের শরীরচর্চা করে না। এর ফলে শরীরচর্চার মানসিক, সামাজিক ও শারীরিক উপকার থেকে তারা বঞ্চিত থাকে। পাশাপাশি কিশোরদের খাদ্যাভ্যাসে বাড়ছে চিনির পরিমাণ।

এতে বাড়ছে স্থূলতা, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, পেশি ও হাড়ের রোগ ছাড়াও অন্যান্য উপসর্গ। ২০০১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ১৪৬টি দেশের ১৬ লাখ কিশোর-কিশোরীর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তি তৈরি হয়েছে এ প্রতিবেদন।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, মেয়েদের তুলনায় ছেলেরা বেশি সক্রিয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই জরিপে বলা হয়েছে, নিয়মিত শরীরচর্চা না করার বিষয়টি এখন প্রায় মহামারীর রূপ নিয়েছে। কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি, মস্তিষ্কের বিকাশ বাধাগ্রস্ত ছাড়াও সামাজিক মেলামেশার দক্ষতা কমছে।