ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে স্কুল চলাকালে প্রাইভেট পড়াতে বাধা দিলে এক অভিভাবককে শিক্ষক তার ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে কোমর ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বেদনায় কাতর দরিদ্র ওই বৃদ্ধ হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার দভিভেলানগর গ্রামের আহত জাহাঙ্গীর হোসেনের (৫০) স্ত্রী শিরিন আক্তার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
তারপর থেকে বৃদ্ধের পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে শিক্ষকের সন্ত্রাসী বাহিনী। থানায় মামলা দিলে বাড়িঘর উচ্ছেদসহ আবারো হামলার ভয় দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিএনপি সরকার ক্ষমতা থাকাকালীন দলীয় প্রভাব দেখিয়ে এই সাইদুল ইসলাম মাস্টার অনেক সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করার অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগীর পরিবার ও বিভিন্ন সূত্রমতে জানা যায়, বাঞ্ছারামপুর উপজেলার দড়িভেলানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাইদুল ইসলাম নিয়মিত শ্রেণিকক্ষে প্রাইভেট পড়ায়। এতে করে ছাত্রছাত্রীদের পাঠদান ব্যাহত হয়। এ ঘটনায় এক ছাত্রের অভিভাবক ও ফেরিওয়ালা জাহাঙ্গীর হোসেন (৫০) শিক্ষককে স্কুল চলাকালীন প্রাইভেট পড়াতে নিষেধ করেন।
এতে ওই শিক্ষক তার পরিচিত স্থানীয় সন্ত্রাসী আনোয়ার হোসেন আনার, সুজন, সোহেল রানার নেতৃত্বে গত সোমবার দুপুরে বাড়িতে গিয়ে দা দিয়ে কুপিয়ে ও কাঠ দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। রক্ষা করতে গেলে জাহাঙ্গীরের স্ত্রী শিরিন আক্তারকেও পিটিয়ে আহত করে। পরে তাদের আহত অবস্থায় বাঞ্ছারামপুর সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ব্যাপারে শিক্ষক সাইদুল ইসলাম বলেন, আমাকে প্রাইভেট পড়াতে বাধা দিয়েছে জাহাঙ্গীর হোসেন। এ ঘটনায় কিছু লোক আমার পক্ষে প্রতিবাদ করলে তাদের জাহাঙ্গীরের লোকজন প্রথমে মারধর করে। পরে ওইসব লোকজন আবার জাহাঙ্গীরকে হামলা করছে বলে শুনেছি। তবে এ হামলাকারী কেউ আমার ভাড়াটে সন্ত্রাসী না। আমি বিএনপি করি অভিযোগটি সঠিক না, আমি কোনো রাজনৈতিক দলের পদে নেই।
এ বিষয়ে আহত জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমাদের স্কুলের সাইদুল মাস্টার ক্লাস ফাঁকি দিয়ে শ্রেণিকক্ষেই প্রাইভেট পড়ায়। আমার ছেলেও এ স্কুলের একজন ছাত্র। আমি স্যারকে বলছি আপনি প্রাইভেট পড়ালে স্কুল টাইম শেষে বাহিরে রুম নিয়ে প্রাইভেট পড়ান। এ কথা বলার কারণে স্যারের ভাড়া করা সন্ত্রাস বাহিনী আনার, সোহেল ও সুজনের নেতৃত্বে বাড়িতে আইসা হামলা করে আমার মাথায় দা দিয়ে কুপ দিছে এবং সারা শরীর কাঠ দিয়ে পিটাইছে। এখন আমার কোমর ভেঙে গেছে। আমার স্ত্রীকেও পিটিয়ে আহত করছে।
এ বিষয়ে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নৌসাদ মাহমুদ বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমি লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।