শিগগির দেশের সব সাংবাদিকের তালিকা প্রণয়ন করে আলাদা ওয়েবসাইট চালু করা হবে। সেখানে প্রকৃত সাংবাদিকের নাম ও ঠিকানা থাকবে। বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল থেকে প্রত্যেক সাংবাদিককে আইডি কার্ড দেওয়া হবে। ফলে যে কেউ চাইলেই নিজেদের প্রেসম্যান হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেন না। যাঁরা প্রকৃত সাংবাদিক, তাঁরাই টিকে থাকবেন।
বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ কিশোরগঞ্জে সাংবাদিকদের এক কর্মশালায় এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের সব সাংবাদিককে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে। মফস্বল সাংবাদিকসহ সব সাংবাদিকের জন্য আর্থিক তহবিল গঠন করা হবে, যাতে কোনো সাংবাদিক আহত হলে চিকিৎসার জন্য সহায়তা করা যায় অথবা মারা গেলে তাঁর পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া যায়।
বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কিশোরগঞ্জের ৪৩ জন সাংবাদিকের অংশগ্রহণে এ প্রশিক্ষণ কর্মশালা হয়। ‘সাংবাদিকতার নীতিমালা, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় লক্ষণীয় বিষয়সমূহ ও তথ্য অধিকার আইন অবহিতকরণ’ শীর্ষক এ কর্মশালার আয়োজক বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল।
জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে কর্মশালার উদ্বোধন করেন প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আবদুল্লাহ আল মাসউদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ রেজওয়ান আহাম্মদ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন জেলার জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা সামছুল হক। প্রশিক্ষণে রিসোর্স পারসন হিসেবে তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ নিয়ে কথা বলেন যুগ্ম সচিব ও বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সচিব মো. শাহ আলম। প্রশিক্ষণ শেষে ৪৩ সাংবাদিককে সনদ দেওয়া হয়।
বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ তাঁর শুভেচ্ছা বক্তব্যে আরও বলেন, সাংবাদিকতার সঠিক নীতিমালা না থাকায় অনেক হকার এখন সম্পাদক হয়ে বসে আছেন। যাঁর হাতে মুঠোফোন আছে, তিনিই সাংবাদিক। যে যাঁর মতো যত্রতত্র নিজেকে সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন। গাড়িতে, মোটরসাইকেলে প্রেস লিখে অবাধে চলাফেরা করছেন। অপসাংবাদিকতা বা যে কেউ নিজেকে সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিতে না পারেন, সে জন্য সাংবাদিকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা যাচাই-বাছাই করে নীতিমালার মাধ্যমে তাঁদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। কয়েক দিনের মধ্যেই ওয়েবসাইটটি প্রকাশ করা হবে।
প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বলেন, কোনো সাংবাদিক যখন ৪০ বছর সাংবাদিকতা করে খালি হাতে বাড়িতে ফেরেন, সেটা খুবই দুঃখজনক ও কষ্টের। সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য পেনশন, আইনজীবীদের নিজস্ব আর্থিক তহবিল থাকলে সাংবাদিকদের জন্য কেন থাকবে না। সে জন্য ছয় মাসের মধ্যে দেশের প্রত্যেক সাংবাদিকের জন্য আর্থিক তহবিল গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।