কিশোরী এক ক্রীড়াবিদকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠার পর বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোর্শেদকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মোহাম্মদ মাসুদ করিমকে টেনিস ফেডারেশনের অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
যৌন হয়রানির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার গুলশান থানায় মামলা হয় বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোর্শেদের বিরুদ্ধে।
গোলাম মোর্শেদের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন যৌন হয়রানির শিকার ১৬ বছরের ওই টেনিস খেলোয়াড়ের চাচা। ভুক্তভোগী ওই কিশোরী প্রবাসী এক টেনিস খেলোয়াড়ের মেয়ে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন গুলশান থানার ডিউটি অফিসার এসআই সিনথিয়া। এ প্রসঙ্গে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, গতকাল মামলা হয়েছে। একমাত্র আসামি বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোর্শেদ। নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ১০ ধারায় ‘শ্লীলতাহানি’র অভিযোগে মামলাটি করা হয়েছে।
বুধবার ভুক্তভোগীর চাচা গুলশান থানায় করা এজাহারে অভিযোগ করেন, ‘আইটিএফ জুনিয়র টেনিসে অংশ নিতে গত ২ নভেম্বর ঢাকায় এসেছিল আমার ভাতিজি। বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোর্শেদের মাধ্যমে ঢাকা ক্লাবের গেস্ট হাউজে উঠেছিল সে। গত ৪ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটের দিকে গোলাম মোর্শেদ আমার ভাতিজির কক্ষের সামনে এসে তাকে ডিনারের প্রস্তাব দেন। আমার অপ্রাপ্ত বয়স্ক ভাতিজি প্রস্তাবে রাজি হলে গোলাম মোর্শেদ তার গাড়িতে গুলশানের বাসায় নিয়ে মদ ও সিগারেটের অফার করেন। গাড়িতে বসে গোলাম মোর্শেদ আমার ভাতিজির শরীরের বাম পাশের উরুতে হাত দিয়ে তাকে শ্লীলতাহানি করে এবং অশ্লীল কথাবার্তা বলে।’
‘পরে আমার ভাতিজিকে নিয়ে মোর্শেদ একটি কফিশপে যায়। কফি খাওয়ার পর আমার ভাতিজি তাকে ঢাকা ক্লাবে পৌঁছে দেয়ার অনুরোধ করলে কৌশলে গোলাম মোর্শেদ তাকে আবার বাসায় নিয়ে কুপ্রস্তাব দেয়। আমার ভাতিজি প্রতিবাদ ও চিল্লাচিল্লি করলে গোলাম মোর্শেদ একটি গাড়ি ভাড়া করে তাকে পৌঁছে দেয়। আমার ভাতিজি হতাশাগ্রস্ত হয়ে কাউকে না জানিয়ে ১৪ নভেম্বর আমেরিকা চলে যায়। আমার ভাই ও ভাতিজির সঙ্গে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জানার পর এজাহার করি। সবকিছু জানতে সময় লাগায় এজাহার করতেও বিলম্ব হয়। এ বিষয়ে বিবাদীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে মর্জি হন।’
যৌন হয়রানির শিকার নারী ক্রীড়াবিদ- এমন সংবাদ ক্রীড়াঙ্গনে মাঝে মধ্যেই আসে। কখনও সতীর্থ, কখনও কোচ আবার কখনও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ওঠে গুরুতর এ অভিযোগ। গত বছর ভারোত্তোলনে ঘটেছিল এমন একটি ন্যক্কারজনক ঘটনা, কয়েক দিন আগে অ্যাথলেটিকসেও। এবার একই রকম ঘটনা ঘটলো টেনিসে।