বরিশালের অয়েল ডিপোগুলোতে জ্বালানী তেল সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে পাম্প ও ডিলারদের চাহিদা মতো পেট্রোল সরবরাহ করা যাচ্ছে না। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন দক্ষিণ-পশ্চিমের ১০ জেলার দেড় শতাধিক ফিলিং স্টেশন এবং দেড় শতাধিক প্যাক পয়েন্ট ডিলার। চট্টগ্রামে রিফাইনারি সার্ভিসিং কার্যক্রম চলমান থাকায় এ সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন অয়েল ডিপোগুলোর কর্মকর্তারা। খবর : বাংলা ট্রিবিউন।
জানা গেছে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, মাদারীপুর, ফরিদপুর, রাজবাড়ী ও গোপালগঞ্জে ডিজেল, পেট্রোল, অকটেন, কেরোসিন ও এলপি গ্যাস সরবরাহ করা হয় বরিশালের যমুনা, মেঘনা, পদ্মা এবং ঝালকাঠির মেঘনা ও পদ্মা অয়েল ডিপো থেকে। এর মধ্যে বরিশালের যুমনা অয়েল ডিপো ব্যতীত মেঘনা ও পদ্মা অয়েল ডিপোতে পেট্রোল বিক্রি হয় না। বরিশালের যমুনা অয়েল ডিপো পেট্রোলশূন্য হয়েছে তিন সপ্তাহ আগে। বিভিন্ন ফিলিং স্টেশন ও প্যাক পয়েন্ট ডিলাররা ঝালকাঠির মেঘনা ও পদ্মা ডিপোতে গেলেও তাদের চাহিদা মতো পেট্রোল দেওয়া হচ্ছে না। ফলে এসব জেলার দেড় শতাধিক ফিলিং স্টেশন ও দেড় শতাধিক ডিলার পয়েন্টে পেট্রোল সংকট দেখা দিয়েছে। গত মাসেও ১৫ দিনের বেশি পেট্রোল ছিল না যমুনা ডিপোতে।
বরিশাল বিভাগীয় ট্যাংক-লরি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শেখ কামাল উদ্দিন বলেন, ‘১০ জেলার ফিলিং স্টেশন এবং ডিলাররা যমুনা অয়েল ডিপোর ওপর নির্ভর করেন। বৃহত্তম এ ডিপোতে পেট্রোল না থাকায় ডিলার ও ফিলিং স্টেশনগুলো হাহাকার করছে। নিরুপায় হয়ে তারা ঝালকাঠির মেঘনা ও পদ্মা অয়েল ডিপোতে গেলেও তাদের চাহিদার এক-তৃতীয়াংশ পেট্রোল দেওয়া হচ্ছে। এতে চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। বিভিন্ন ফিলিং স্টেশন এবং ডিলার পয়েন্টে এখন পেট্রোল নেই বললেই চলে।’
বরিশাল নগরীর রূপাতলীর হাজী ফিলিং স্টেশনের ব্যবস্থাপক মো. রানা বলেন, ‘বরিশালে পেট্রোলের সংকট রয়েছে। তবে ফিলিং স্টেশনগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ডিপো থেকে পেট্রোল পাচ্ছে। মূল সমস্যা হচ্ছে ডিলারদের।’
বরিশাল যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ডিপো ব্যবস্থাপক ফখরুল ইসলাম জানান, তাদের ডিপোতে অনেক দিন ধরে পেট্রোল নেই। তাদের ডিলার ও নিয়ন্ত্রণাধীন ফিলিং স্টেশনগুলো ঝালকাঠির পদ্মা এবং মেঘনা ডিপোতে পেট্রোল আনতে গেলে, চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করা হচ্ছে না। অথচ অতীতে যখন ঝালকাঠির পদ্মা ও মেঘনা ডিপোতে পেট্রোল ছিল না তখন তাদের ডিলার ও ফিলিং স্টেশনগুলোকে বরিশাল যমুনা ডিপো থেকে চাহিদা অনুযায়ী পেট্রোল সরবরাহ করা হয়েছে।
যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপক ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘চট্টগ্রামে রিফাইনারি সার্ভিসিং হচ্ছে। এ কারণে পেট্রোল ও এলপি গ্যাসসহ অন্যান্য জ্বালানির সংকট রয়েছে। তবে শিগগিরই এ সংকট কেটে যাবে।’
বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী বলেন, ‘বরিশালে সরকারি ডিপোতে পেট্রোল সংকটের বিষয়টি আমার জানা ছিল না। সংকট যেন দীর্ঘায়িত না হয় সে জন্য কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে।’