পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, শতভাগ তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়নি বলে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে এনআরসির (নাগরিক পঞ্জি) কোনো সম্পর্ক নেই।
বেইজিং ঘোষণার ২৫ বছর পূর্তিতে আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
আজ বুধবার থেকে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) দুই দিনের বৈঠক শুরুর কথা ছিল। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা উচ্চ পর্যায়ের অনুমতির অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু সরকারের উচ্চ পর্যায়ের অনুমতি না পাওয়ায় ওই দিন বিকেলে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বৈঠকে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত ভারতকে জানিয়ে দেওয়া হয়।
ভারতের পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে নাগরিকত্ব বিল পাসকে কেন্দ্র করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসামসহ কয়েকটি রাজ্যের পর রাজধানী দিল্লিতেও বিক্ষোভ চলছে। এই পরিস্থিতিতে গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার যথাক্রমে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ভারত সফর বাতিল হয়ে যায়।
জেআরসির বৈঠক পিছিয়ে দেওয়ার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন বলেন, ‘অনেকগুলো তথ্য এখনো সংগ্রহ করা যায়নি বলে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশনের সচিব পর্যায়ের বৈঠক পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা যখন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে পুরোপুরি প্রস্তুত হব, তখন আবার এই বৈঠক হবে। কেননা তথ্য ঠিকমতো না হলে বৈঠকের আলোচনা ফলপ্রসূ হবে না। আমরা তথ্য সংগ্রহ করেছিলাম। কিন্তু পর্যালোচনা করে দেখলাম, প্রাপ্ত তথ্যের কোথাও কোথাও দুর্বলতা রয়েছে। তাই আগে শতভাগ তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই বৈঠক পেছানোর সঙ্গে এনআরসির কোনো সম্পর্ক নেই।’
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মিডিয়ায় আমরা শুনছি, কিছু বাংলাদেশিকে ভারত থেকে দেশে পুশ ব্যাক করা হচ্ছে। আমরা সেটা ভারত সরকারকে জিজ্ঞেস করেছি। ভারত সরকার আমাদের বলেছে—আমরা কাউকে পুশ ব্যাক করছি না। ভারত সরকারকে আমরা বলেছি, কোনো অবৈধ বাংলাদেশি যদি থেকে থাকে আমাদের জানাবেন, আমরা যাচাই-বাছাই করে যারা বাংলাদেশি হবে অবশ্যই তাদের গ্রহণ করব।’
তিনি বলেন, ‘ভারত আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র। ঐতিহাসিকভাবে আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক। ভারতে যদি বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় প্রতিবেশী দেশে কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে। আমরা চাই ভারতে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকবে, কোনো ধরনের উত্তেজনা সৃষ্টি হবে না, যাতে বাংলাদেশ অসুবিধায় পড়তে পারে।’