ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে কয়েক বছর ধরেই বাড়ছে আখের আবাদ। লাভজনক হওয়ায় অন্তত চার বছর ধরে এখানকার কৃষকরা আখ চাষে ঝুঁকছেন। উপজেলা কৃষি বিভাগ বলছে, উপজেলাটি ধান ও পানের জন্য পরিচিত হলেও কৃষকরা এখন আখ আবাদেও যুক্ত হচ্ছেন। চলতি বছর উপজেলায় ফসলটির চাষ হয়েছে প্রায় ১৫ হেক্টর জমিতে।
উপজেলার শহর ও সংলগ্ন দৌলতপুর এলাকার কয়েকটি গ্রাম ঘুরে আখ চাষ নিয়ে কথা হয় বেশ কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে। এ সময় পার্বতীপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল বারী মন্ডল বলেন, তিনি আখ চাষ করছেন দুই বছর ধরে। হরিশপুরে তার এক আত্মীয়কে দেখে তিনি ফসলটি চাষে আগ্রহী হন। ওই আত্মীয়ের কাছ থেকে সংগ্রহ করেন বীজ। এরপর ২০১৮ সালে প্রথম ১৮ শতক জমিতে আবাদ শুরু করেন। মূলত মার্চের দিকে আখের জমি তৈরি করা হয়। আর প্রায় ১০ মাস পর আখ বিক্রির উপযুক্ত হয়। তিনি বলেন, ১৮ শতক জমিতে আখ চাষ করে তিনি এক মৌসুমে ১ লাখ টাকা লাভ করেছেন। এ বছরও তিনি সমপরিমাণ জমিতে এর আবাদ করেছেন।
হরিশপুরের বেশ কয়েকজন কৃষক জানান, ২০১৩ সালের দিকে তাদের গ্রামের নাজিম উদ্দিন ১০ শতক জমিতে আখ চাষ করেন। ভালো মুনাফা হওয়ায় এরপর প্রতি বছরই তিনি জমির পরিমাণ বৃদ্ধি করেন। বর্তমানে তাকে দেখে অনুপ্রাণিত গ্রামের অনেকেই আখ চাষ করছেন।
ওই গ্রামের কৃষক কলম আলী জানান, তার নিজের কোনো জমি নেই। ২৪ শতক জমি বর্গা নিয়ে এবার আখ চাষ করেছেন। তিনি নিজেই দোকানে এ আখ বিক্রি করেন। প্রতিটি আখ বিক্রি করেন ৪০-৫০ টাকায়। আর যারা পাইকারি হিসেবে বিক্রি করেন, তারা প্রতিটি আখে ৩০-৪০ টাকা পান।
ইতাহার আলী নামে আরেক কৃষক বলেন, বর্তমানে বাজারে ধানের দাম কম। অন্য ফসল উৎপাদন করেও কৃষক খরচ তুলতে পারছেন না। সে তুলনায় এক বিঘা জমিতে ১ লাখ টাকা খরচে ৪ লাখ টাকার আখ পাওয়া যায়। অল্প জমিতে অধিক লাভ হওয়ায় এখানকার কৃষকরা ফসলটি আবাদে ঝুঁকছেন।
আখ চাষ নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে হরিণাকুণ্ডু উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আরশেদ আলী চৌধুরী বলেন, মাত্র চার-পাঁচ বছরের ব্যবধানে উপজেলায় ১৫ হেক্টর জমিতে আখের আবাদ ছড়িয়ে পড়েছে। ফসলটি খুবই লাভজনক হওয়ায় কৃষকরাও আগ্রহী হচ্ছেন। কৃষি বিভাগ থেকে এ বিষয়ে কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।