বিআইএফসিতে লুটপাট : কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ ৩ সংস্থা চুপ

বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানিতে (বিআইএফসি) লুটপাটের ঘটনার সময় ‘নীরব দর্শকের ভূমিকা’য় ছিলেন তদারকির তিন সংস্থার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সংস্থাগুলো হচ্ছে-বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন বিভাগ, শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং কোম্পানিগুলোর নিবন্ধক পরিদপ্তর যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর নিয়ন্ত্রক (আরজেএসসি)।

অনেক ক্ষেত্রে এসব প্রতিষ্ঠান অনিয়ম প্রতিরোধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে লুটপাটের পক্ষে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে। অথচ প্রতিটি সংস্থারই নিজস্ব আইনে অনিয়মের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার যথেষ্ট আইনি ভিত্তি ছিল।

আর্থিক খাতে জাল-জালিয়াতির বিষয়ে আদালতের নির্দেশে বাংলাদেশ ব্যাংকের গঠিত ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং’ বা ‘কারণ অনুসন্ধান’ কমিটির প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

সূত্র জানায়, ১ অক্টোবর বিআইএফসির আর্থিক অনিয়মের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দায়দায়িত্ব নির্ধারণ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে ওই কমিটি। প্রতিবেদনটি আদালতে উপস্থাপন করা হবে। আদালত তিনটি প্রতিষ্ঠানে অনিয়মের বিষয়ে কারা কিভাবে জড়িত সে বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন। এর মধ্যে বিআইএফসির তদন্ত প্রতিবেদন গভর্নরের কাছে জমা দেওয়া হলো। এখন ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ও পিপলস লিজিংয়ের ওপর তদন্ত হবে।

প্রতিবেদনে বিএফএফইসর অনিয়ম-দুর্নীতির প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের যেসব বিভাগের কর্মকর্তারা জড়িত ছিলেন এবং সংশ্লিষ্ট ফাইলে স্বাক্ষর করেছেন তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিবন্ধন নিয়ে বিআইএফসি আর্থিক কার্যক্রম শুরু করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লাইসেন্স দেখে আমানতকারীরা অর্থ জমা রাখেন। এখন আমানত ফেরত দিতে প্রতিষ্ঠানটির ব্যর্থতার দায় নিয়ন্ত্রক হিসাবে বাংলাদেশ ব্যাংককেও নিতে হবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

সূত্র জানায়, প্রতিষ্ঠানটির তাদকির দায়িত্ব ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, পরিদর্শনের দায়িত্ব পালন করত ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগ ২ এর আর্থিক প্রতিষ্ঠান উপবিভাগ এবং পরে গঠিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন বিভাগ। এর মধ্যে নিয়ন্ত্রক হিসাবে কাজ করত আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। এই কমিটির প্রধান করা হয় ডেপুটি গভর্নর একেএম সাজেদুর রহমান খানকে। পরে আদালত আরও দুজনকে কমিটিতে যুক্ত করেন।