একদিনে ১৩ প্রতিষ্ঠানের চাকরি পরীক্ষা, বিপাকে প্রার্থীরা

আগামীকাল শুক্রবার ৪৩তম বিসিএসসহ ১৩ প্রতিষ্ঠানের চাকরির পরীক্ষা রয়েছে। এদিন বিসিএস, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডসহ মোট ১৩টি প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। একই দিনে একাধিক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন চাকরিপ্রত্যাশীরা।

যে ১৩টি প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষা হবে সেগুলো হলো- পিএসসির ৪৩তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), মহিলা ও শিশু-বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, সাতক্ষীরা, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।

পিএসসির থেকে জানা গেছে, এবার ৪৩তম বিসিএসে আবেদন করেছেন ৪ লাখ ৩৫ হাজার ১৯০ জন চাকরিপ্রার্থী। ৪৩তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দেশের আট বিভাগ- ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে। শুক্রবার একযোগে সকাল ১০টায় এই পরীক্ষা শুরু হবে।

শুক্রবার সকালে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষা রয়েছে। এদিন বিসিএস ছাড়াও সকাল ১০টায় পরীক্ষা হবে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, সাতক্ষীরার বিভিন্ন পদের পরীক্ষা।

বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ এবং মহিলা ও শিশু-বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পরীক্ষা হবে বেলা সাড়ে ১১টায়। আর বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের দুটি পদের মৌখিক পরীক্ষা শুরু হবে বেলা আড়াইটায়। এছাড়া শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরীক্ষা বেলা ৩টায় ও ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড ও বেবিচকের পরীক্ষা বেলা সাড়ে ৩টায় শুরু হবে।

এর মধ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, সাতক্ষীরার পরীক্ষা ছাড়া বাকি সব প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ঢাকায়। এর মধ্যে বিআরটিএ’র একটি পদে ব্যবহারিক পরীক্ষা হবে।

এর আগে গত ৮ অক্টোবর একদিনে ১৪ পরীক্ষা ও ২৩ অক্টোবর একদিনে ১৫টি প্রতিষ্ঠানের চাকরির পরীক্ষা ছিল। একই দিনে একাধিক প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা থাকায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে পরীক্ষার্থীদের। অনেকে এটি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

গত ৮ অক্টোবর একদিনে ৫টি পরীক্ষা থাকা এক এক চাকরিপ্রত্যাশী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘করোনার সময় অনেক কষ্টে আমরা আবেদন করেছি। আর এখন একদিনে ৫টা পরীক্ষা থাকায় দু-তিনটা পরীক্ষা দিতে পারছি না। আমাদের টাকা, সুযোগ দুটোই নষ্ট হচ্ছে। আবার চাকরির বয়সও শেষ হয়ে যাচ্ছে। স্কুলগুলোতো দুপুরের পর ফাঁকা থাকে। সপ্তাহের সাতদিনই পরীক্ষা নেওয়া যেতো।’

দিনাজপুর থেকে সেদিন পরীক্ষা দিতে ঢাকায় এসেছিলেন সজীব আহমেদ। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সকালে একটা পরীক্ষা দিলাম। এখন আরেকটা দেবো। প্রতিষ্ঠানগুলো চাইলে বিভাগীয় পর্যায়ে নিয়োগ পরীক্ষাগুলো নিতে পারতো। একদিনে অনেক পরীক্ষা থাকায় বাধ্য হয়েই দু-একটা দিতে হচ্ছে। কিন্তু সবগুলোরই আবেদন ফি তো পরিশোধ করতে হয়েছে।’

তবে পরীক্ষা জট কমাতে আগের ঘোষিত সময় অনুযায়ী এই মুহূর্তে এভাবে পরীক্ষা নেওয়া ছাড়া উপায় নেই বলে জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।

এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, দীর্ঘদিন করোনাভাইরাস সৃষ্ট মহামারির কারণে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ আটকে থাকায় এখন সাপ্তাহিক বন্ধের দিনগুলোতে একই সঙ্গে একাধিক নিয়োগ পরীক্ষা নিতে হচ্ছে। চাকরিপ্রার্থীদের আপাতত একটু ছাড় দিয়ে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।