সরবরাহ-স্বল্পতার কারণে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করে এরই মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। তবে আমদানি শুল্ক কমানো হলেও ভারতের বাজারে পেঁয়াজের দাম বেশি থাকার কারণে দেশের বাজারে দাম কমার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা।
ব্যবসায়ীরা জানান, শুল্ক প্রত্যাহারের পরও দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম ৪২ থেকে ৪৬ টাকার নিচে নামবে না। তবে শীতকালে দেশের কৃষিজমিগুলোয় নতুন পেঁয়াজ এলে একই সঙ্গে ভারতের বাজারেও নতুন পেঁয়াজ আসবে। তখন কৃষিপণ্যটির সরবরাহ বাড়লে দাম কমে আসবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক মোবারক হোসেন বলেন, ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারণে পেঁয়াজের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। ফলে সরবরাহ-স্বল্পতার কারণে সে দেশের বাজারেই পেঁয়াজের দাম বেশি। যার কারণে আমাদের বাড়তি দামে পেঁয়াজ আমদানি করতে হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে দেশের বাজারে। তবে সম্প্রতি সরকার যে পেঁয়াজ আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করে নিয়েছে, তাতে এর ওপর প্রতি কেজিতে যে ২ টাকা ৭০ পয়সা শুল্ক দিতে হতো, তা এখন আর দিতে হবে না।
ব্যবসায়ীরা জানান, এখনো ভারতের বাজারে পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী। পূজার কারণে বন্দরের আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বন্ধ থাকায় মোকামগুলোয় পেঁয়াজের লোডিং বন্ধ ছিল। ফলে বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ-স্বল্পতা দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে ভারতের বাজারে বর্তমানে পেঁয়াজের যে দর চলছে, তাতে শুল্ক প্রত্যাহার করলেও প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম পড়বে ৪৫ থেকে ৪৬ টাকার মতো।
বন্দরের ব্যবসায়ীরা জানান, পূজার বন্ধ শেষে আজ থেকে পুনরায় পেঁয়াজ আমদানি শুরু হবে। এতে বন্দরে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৪২ থেকে ৪৬ টাকা দরে বিক্রি হতে পারে, যা বন্ধের আগে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত ছিল।
আমদানিকারক মোবারক হোসেন বলেন, শীতকাল আসার আগ পর্যন্ত দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। শীতে দেশের বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসার পাশাপাশি ভারতের বাজারেও নতুন পেঁয়াজ আসবে। ফলে সরবরাহ বাড়লে দাম কমে আসবে দাম।
তিনি জানান, বর্তমানে যে আবহাওয়া চলছে, তা গত কয়েক বছরে দেখা যায়নি। এখনো পুরনো পেঁয়াজ বেশ ভালো অবস্থায় রয়েছে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে। উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের কাছেই পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। ব্যবসায়ীরা এসব পেঁয়াজ ধীরে ধীরে বাজারে ছাড়ছেন। মোবারক হোসেন জানান, শীতকাল এলে মজুদকৃত পেঁয়াজ থেকে গাছ বের হয়ে আসবে। তখন ব্যবসায়ীরা বাধ্য হয়ে ৪০ টাকার পেঁয়াজ ২০ টাকায় হলেও ছেড়ে দেবেন, না হলে এসব পেঁয়াজ ফেলে দিতে হবে। এতে বাজারে সরবরাহ বাড়বে, তাতে পেঁয়াজের দাম কমবে।
তিনি জানান, পূজার বন্ধের সময় বাংলাদেশের মোকামগুলোয় দেশীয় পেঁয়াজের বাজার ছিল ৪৫ টাকা। আগামীকাল (আজ) ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হবে। এ খবরে এসব পেঁয়াজ এখন কেজিপ্রতি ৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে আমদানীকৃত পেঁয়াজের চাহিদা বাড়ায় দামও বেশ ঊর্ধ্বমুখী।