শঙ্কায় ১০০০ কারখানা

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ৩৭ শতাংশ শুল্ক পুরোপুরি প্রত্যাহার না হলে বাংলাদেশের এই প্রধান রপ্তানি খাতকে প্রতি মাসে গড়ে ২৫০ মিলিয়ন ডলার শুল্ক পরিশোধ করতে হতে পারে। এতে প্রায় ১ হাজার পোশাক কারখানা ক্ষতির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পোশাকশিল্পের নেতারা।

শনিবার (১৯ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর উত্তরার জায়ান্ট বিজনেস টাওয়ারে বিজিএমইএ নির্বাচন ২০২৫–২০২৭ উপলক্ষে সম্মিলিত পরিষদের নির্বাচনী অফিস উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা জানান বক্তারা।

অনুষ্ঠানে সম্মিলিত পরিষদের প্যানেল প্রধান মো. আবুল কালাম বলেন, “আমেরিকান বাজারে আমাদের পোশাক রপ্তানিতে ৩৭ শতাংশ শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত হওয়া নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক দিক। এই উদ্যোগের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ধন্যবাদ জানাই।”

তিনি আরও বলেন, “তবে ৯০ দিনের সময়সীমা শেষে পুনরায় যেন এই শুল্কের মুখোমুখি না হতে হয়, সে লক্ষ্যে সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতা আরও বাড়ানো প্রয়োজন। ড. ইউনূস যেন সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যান, সেটাই এখন সময়ের দাবি।”

এ সময় পোশাকশিল্প উদ্যোক্তারা বলেন, সাধারণত শুল্ক পরিশোধের দায়িত্ব ক্রেতাদের হলেও বর্তমান বায়িং প্যাটার্ন অনুযায়ী ক্রেতারা অতিরিক্ত খরচ জোর করে সরবরাহকারীর ওপর চাপিয়ে দিচ্ছেন। ফলে এই শুল্কভার দেশের রপ্তানিকারকদের জন্য বড় বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি ও নির্বাচন ২০২৫–২০২৭ এর প্রধান সমন্বয়কারী ফারুক হাসান বলেন, “আমরা যে ধারাবাহিক সাফল্য দেখছি, তার পেছনে সম্মিলিত পরিষদের অবদান অসীম। তবে বর্তমান বাস্তবতায় আমাদের এলডিসি উত্তরণ সময়সীমা কমপক্ষে তিন বছর পেছানো উচিত, যাতে আমরা প্রস্তুতি নিতে পারি।”

তিনি বলেন, “আমেরিকার শুল্কারোপ একতরফা। যদি তা পারস্পরিক হতো, তবে আমাদের ওপর শুল্ক অনেকটাই কমে যেত। তবে মার্কিন প্রশাসন মূলত বাণিজ্য ঘাটতি কমাতেই এমন শুল্কারোপ করছে। এক্ষেত্রে সরকারের উচিত কোনো অযাচিত প্রতিশ্রুতি না দেওয়া।”

সম্মিলিত পরিষদের সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, “শিল্পকে রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। কেবল আমদানি বাড়িয়ে ঘাটতি পূরণ সম্ভব নয়, তবে আমরা আমদানি বাড়াতে আগ্রহী। সরকারকে তাই এই বিষয়ে সচেতনভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে।”

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা জয়নুল আবদিন ফারুক, সম্মিলিত পরিষদের প্রধান সহ-সমন্বয়কারী রফিকুল ইসলাম, বিজিএমইএ’র সাবেক পরিচালক শোভন ইসলাম, বাংলাদেশ গার্মেন্টস বায়িং হাউজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন পাভেল, বিজিএমইএ’র সহায়ক কমিটির সদস্য আসিফ আশরাফ এবং বায়লা সভাপতি আবরার হোসেন সায়েম।

বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা ধরে রাখতে এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখতে আমেরিকার ৩৭ শতাংশ শুল্ক পুরোপুরি প্রত্যাহার জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তা না হলে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত বড় ধরনের চাপে পড়তে পারে বলে মনে করছেন শিল্প নেতারা।

জেএস