ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় দুই ট্রেনের ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫ নারী ও ১ শিশুসহ কমপক্ষে ১৬ জন নিহত হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এঘটনায় আহত হয়েছেন শতাধিক। আহতদেরকে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
সোমবার দিবাগত রাত ২ টা ৪৮ মিনিটে উপজেলার মন্দবাগে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা ও সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেন দুটির মধ্যে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। এ সময় একটি ট্রেনের একাধিক বগি আরেকটি ট্রেনের কয়েকটি বগির ওপর উঠে যায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত উদ দৌলা দুর্ঘটনার এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, উদ্ধার তৎপরতা চালানো হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থলের কাছে একটি অস্থায়ী ক্যাম্প খোলা হয়েছে।
স্টেশন ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, তূর্ণা নিশীথা ট্রেনের চালক সিগন্যাল (সংকেত) অমান্য করায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। মন্দবাগ রেল স্টেশনে দাঁড়ানোর জন্য এই সিগন্যাল দেওয়া হয়। ওই সিগন্যালে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস প্রধান লেন থেকে ১ নম্বর লাইনে যেতে শুরু করে। ট্রেনটির ছয়টি বগি ১ নম্বর লাইনে উঠতে পেরেছিল। অন্য বগিগুলো প্রধান লেনে থাকা অবস্থায় তূর্ণা নিশীথা সিগন্যাল অমান্য করে। এতে তূর্ণা নিশীথার একাধিক বগি ওই ট্রেনের কয়েকটি বগির ওপর উঠে যায়। এতে উদয়নের তিনটি বগি দুমড়ে মুচড়ে যায়। নিহত ১৫ জন সবাই উদয়নের যাত্রী ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, ঘটনাস্থলের কাছে বায়েক শিক্ষা সদন উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি অস্থায়ী ক্যাম্প খোলা হয়েছে। সেখানে নয়টি লাশ রয়েছে। কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনটি লাশ রয়েছে। এর মধ্যে একজন পুরুষ, একজন নারী ও একটি শিশু। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে নারী ও পুরুষের দুটি লাশ রয়েছে। আর কুমিল্লা জেলা সদর হাসপাতালে একজন পুরুষের লাশ রয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে নিহত কারও পরিচয় জানা যায়নি।
ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় অধিবাসীরা উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন।
দুর্ঘটনার পর ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেটের রেলযোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।