বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান বলেছেন, ‘প্রবৃদ্ধি, ঘাটতি অর্থায়ন- এগুলোর চেয়েও ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ মানুষকে কিভাবে দ্রুত টিকা দেওয়া যায় সেই প্রশ্নটিই এখন মূখ্য। টিকা পেলেই মানুষের মনে স্বস্তি আসবে। ব্যবসায়ী আস্থাও বাড়বে। সফল হবে করোনা সঙ্কট কাটিয়ে অর্থনৈতিক ও সামাজিক পুনরুদ্ধারের কৌশল।’
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন সমন্বয়ের পক্ষ থেকে শনিবার (৫ জুন) ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট পর্যালোচনা উপস্থাপনকালে এসব কথা বলেন ড. আতিউর রহমান। বাজেট পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ নিয়ে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির পক্ষ থেকে আরো বক্তব্য রাখেন অর্থনীতিবিদ ড. এ কে এনামুল হক এবং সমাজতাত্ত্বিক খন্দকার সাখাওয়াত আলি।
শিল্প ও ব্যবসাবান্ধব কর প্রস্তাবগুলোকে প্রস্তাবিত বাজেটের সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গা হিসেবে অভিহিত করে ড. আতিউর রহমান বলেন, মহামারিজনিত মন্দাবস্থার কথা বিবেচনা করে চলতি বছরের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর আহরণের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে আনা হয়েছে এবং আসন্ন অর্থবছরের প্রস্তাবিত লক্ষ্যমাত্রা চলতি অর্থবছরের সমান রাখা হয়েছে। তাঁর মতে, এই তিন লাখ ৩০ হাজার ৭৮ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন চ্যালেঞ্জিং এবং এটি অর্জনে রাজস্ব বোর্ডকে সর্বোচ্চ দক্ষতার নজির স্থাপন করতে হবে।
ড. এ কে এনামুল হক বলেন, সামাজিক নিরাপত্তায় সাধারণত দারিদ্র্য সীমার নিচে থাকা মানুষদের দিকেই মনোযোগ দেওয়া হলেও, এর একটু উপরে থাকা নিম্ন মধ্যবিত্তদের দিকেও নজর দেওয়া দরকার। এ জন্য সার্বজনীন পেনশন স্কিম নিয়ে কাজ শুরু হওয়া দরকার বলে তিনি মনে করেন।
খন্দকার সাখাওয়াত আলী বলেন, বাজেটে ৭০-৮০ শতাংশ নাগরিককে করোনা টিকা দেওয়ার কথা বলা হলেও কতো সময়ের মধ্যে তা করা হবে তা স্পষ্ট নয়। তিনি মনে করেন, আসন্ন অর্থবছরের মধ্যেই এ লক্ষ্য অর্জনে প্রাথমিকভাবে টিকা আমদানি এবং পরবর্তিতে টিকা উত্পাদনে জোর দিতে হবে। এ জন্য কূটনৈতিক তত্পরতা জোরদার করার কোনো বিকল্প নেই।
উন্নয়ন সমন্বয়ের গবেষণা পরিচালক আব্দুলল্লাহ নাদভীর সঞ্চালনায় প্রশ্নোত্তর পর্বে গণমাধ্যমের বাজেট বিষয়ক বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ড. আতিউর ও অন্যান্য প্যানেল আলোচকরা। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আলোচকরা বলেন যে, স্বাস্থ্য খাতে ব্যয়ের কাঠামোগত পরিবর্তন না করে কেবল বরাদ্দ বাড়ালে সুফল পাওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে হেলথ ভাউচার চালু করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য সেবা নিচ্ছেন এমন মানুষদের একটি অংশের দায়িত্ব সরকার নিলে তা খুবই কার্যকর হবে।