কলেজছাত্র ইমনের উপর হামলাকারীরা গ্রেফতার হয়নি

ক্রিকেট ও ব্যাটমিন্টন খেলোয়াড় কলেজছাত্র ডি এম ইমরান হোসেন ইমনের (১৯) উপর একদল সন্ত্রাসী বর্বর হামলা চালিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গুরুতর অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার ক্ষত-বিক্ষত শরীর নিয়ে ইমন হাসপাতালে ব্যাথা আর যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। ঘটনার তিন দিন পরও অপরাধীরা গ্রেফতার হয়নি।

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা সদরের রাতে আঁধারে খেলোয়াড় ইমনের উপর এমন অমানবিক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ সোমবার গুরুতর আহত ইমন ও তার বাবা দেওয়ান রেফাজ উদ্দিন এ অভিযাগ তুলে ধরেন।

মির্জাপুর থানায় লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, মির্জাপুর উপজেলা সদরের পৌরসভার ইউনিয়ন পাড়া বাওয়ার কুমারজানি রোডে ইমরান হোসেন ইমনের বাড়ি। ইমন মির্জাপুর সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র।

ইমনের পরিবার অভিযোগ করেন, ঘটনার দিন রাতে মির্জাপুর সাহাপাড়া গ্রামে ইমন ও তার কয়েকজন বন্ধুরা মিলে ব্যাটমিন্টন খেলতে যায়। এলাকার চিহ্নিত বখাটে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ এবং ছিনতাইকারী হিসেবে পরিচিত পুষ্টকামুরী গ্রামের ইমন, বাইমহাটি গ্রামের শুভ ও নিলয়সহ তাদের সহযোগীরা খেলোয়াড় ইমরান হোসেন ইমনকে ব্যাটমিন্টন খেলার মাঠ থেকে ধরে এনে লাঠিসোঠা, হকিস্টিক ও লোহার চেইন দিয়ে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে পুরো শরীর রক্তাক্ত ও হত্যার চেষ্টা করে।

ইমনকে পিটিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা ইমনের গলার চেইন, দামী ঘড়ি এবং একটি দামী মোবাইল সেটসহ নগদ টাকা-পয়সা লুটে নিয়ে যায়।

স্থানীয় লোকজন ও পথচারীরা ঘটনা দেখে মির্জাপুর থানা পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশের সহযোগিতায় ইমনকে উদ্ধার করে প্রথমে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে এবং পরে জামুর্কি সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, ইমনের পুরো শরীর রক্তাক্ত ও ক্ষত-বিক্ষত। কুমুদিনী হাসপাতাল ও মির্জাপুর সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ইমনের মাথায় ও শরীরে আঘাত করা হয়েছে এবং মারপিটের ক্ষত-বিক্ষত এবং কানের ভিতর দিয়ে রক্ত ঝরেছে। তার আশংকা এখনো কাটেনি। যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন।

এদিকে, এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সন্ত্রাসী ইমন, নিলয় ও শুভসহ তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে সাহাপাড়া, আন্ধরা, পালপাড়া, বাইমহাটি, পুষ্টকামুরী, মির্জাপুর বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া মির্জাপুর সরকারি কলেজ, মির্জাপুর এস কে পাইলট মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এবং মির্জাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের উত্ত্যক্তদের অভিযোগ রয়েছে। ভুক্তভোগী এলাকাবাসী এই গ্রুপের সদস্যদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার ওসি (তদন্ত) মো: মোশারফ হোসেন বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ পাওয়ার পর আসামি ইমন, শুভ ও নিলয়সহ তাদের সহযোগীদের ধরতে পুলিশ চিরুনি অভিযান শুরু করেছে। তারা পলাতক থাকায় এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।