হিলি স্থলবন্দরে ২৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকার রাজস্ব ঘাটতি

দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে ২০২১-২২ অর্থবছরে রাজস্ব আহরণে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। এ সময় বন্দর থেকে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৫৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা। অর্থবছর শেষে আহরণ হয়েছে ৪২৯ কোটি ৯ লাখ টাকা। চালসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি কমার কারণে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়নি বলে দাবি কাস্টমস কর্তৃপক্ষের। এদিকে বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও বিরাজমান সমস্যা নিরসন করা হলে রাজস্ব আহরণ বাড়বে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।

হিলি স্থল শুল্ক স্টেশন কার্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে হিলি স্থলবন্দরে লক্ষ্যমাত্রার বাড়তি ৮৭ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ হয়। ফলে ২০২১-২২ অর্থবছরে হিলি স্থলবন্দর থেকে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা বাড়িয়ে ৪৫৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা নির্ধারণ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পণ্যের মূল্য বেড়েছে। একই সঙ্গে ডলার রেট বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে আমরা ভারত থেকে যেসব পণ্য আমদানি করতাম, বিশেষ করে অধিক শুল্কযুক্ত পণ্যের আমদানি কিছুটা কমে এসেছে। এটি রাজস্ব আহরণে ঘাটতির একটি কারণ বলে মনে করছি। এছাড়া পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে অন্যান্য বন্দরের তুলনায় হিলি স্থলবন্দরের ক্ষেত্রে কিছু বৈষম্য রয়েছে, যার কারণে আমদানিকারকদের ইচ্ছা থাকলেও অনেক পণ্য আমদানি করতে পারেন না তারা। এছাড়া বন্দরের সড়কগুলো খারাপ। ভেতরে যানজটের কারণে দীর্ঘ সময় লাগায় পণ্য আমদানি করে লোকসান গুনছেন আমদানিকারকরা। এসব সমস্যার সমাধান করা হলে রাজস্ব আহরণ বাড়বে।

বাংলাহিলি কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জামিল হোসেন বলেন, বন্দরের অভ্যন্তরের কিছু অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়। বিশেষ করে ভারী যন্ত্রপাতি আমদানির ক্ষেত্রে বন্দরের ভেতরে এসব পণ্য ওঠানো-নামানোর জন্য যেসব ইকুইপমেন্ট প্রয়োজন, ক্রেনসহ যেসব ইকুইপমেন্ট আনতে হবে। সেই সঙ্গে এখানে যদি একটি স্ক্যানার মেশিন বসানো হয়, তাহলে জটিলতা কমবে এতে করে বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি বাড়বে এতে করে রাজস্ব আহরণ বাড়বে বলে জানান তিনি।

সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট শাহিনুর রেজা বলেন, বন্দর দিয়ে শুল্কযুক্ত পণ্যের আমদানি কমে যাওয়া রাজস্ব আহরণে ঘাটতির মূল কারণ। বন্দর দিয়ে আগে প্রচুর পাথর আমদানি হলেও ভারতীয় ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে পাথরগুলো হিলি দিয়ে না এসে এখন অন্য বন্দর দিয়ে আমদানি হচ্ছে। এছাড়া বেনাপোলসহ অন্য বন্দরে যে মূল্যে শুল্কায়ন করা হয়, একই পণ্য হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানির ক্ষেত্রে বাড়তি মূল্যে শুল্কায়ন করায় মোটরসাইকেল পার্টস আমদানি একেবারে বন্ধ রয়েছে।

হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা এসএম নুরুল আলম খান বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে চাল আমদানিতে রাজস্ব আহরণ হয়েছিল ৮২ কোটি টাকার মতো। কিন্তু ২০২১-২২ অর্থবছরে চাল আমদানিতে শুল্কহার বাড়ানোয় বন্দর দিয়ে আমদানি পুরোপুরি বন্ধ ছিল। ফলে রাজস্ব আহরণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হয়নি। সেই সঙ্গে অন্যান্য শুল্কযুক্ত পণ্যের আমদানি কিছুটা কম হওয়ার প্রভাব পড়েছে।