যুক্তরাষ্ট্রের ওপর পাল্টা ১০ হাজার ডলারের ভিসা বন্ড চালু করল মালি

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য নতুন ভিসা নীতিমালা ঘোষণা করেছে। এখন থেকে দেশটিতে ব্যবসায়িক বা পর্যটনের উদ্দেশ্যে প্রবেশ করতে চাইলে মার্কিন নাগরিকদের সর্বোচ্চ ১০ হাজার ডলার পর্যন্ত বন্ড জমা দিতে হবে।

মালির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত অনুরূপ নীতির প্রতিক্রিয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে এমন নিয়ম চালু করায় মালি ‘সমপরিমাণ ভিসা কর্মসূচি’ কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মালিতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানায়, এই বন্ড ব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত সুরক্ষা ও জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার প্রতিশ্রুতি আরও জোরদার করার অংশ।

সম্প্রতি দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের উদ্যোগ থাকলেও এই সিদ্ধান্তে কূটনৈতিক সম্পর্ক নতুন করে উত্তেজনার মুখে পড়েছে। চলতি বছরের জুলাইয়ে মার্কিন কর্মকর্তারা মালি সফর করেছিলেন সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা ও অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব নিয়ে আলোচনা করতে। সফরে তারা মালির সোনা ও লিথিয়াম খাতে বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়েও আগ্রহ দেখান।

তবে ২০২১ সালে সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জেনারেল আসিমি গোইতা ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মালির সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করে। ক্ষমতায় এসে তিনি দেশটিকে পশ্চিমা প্রভাব থেকে সরিয়ে রাশিয়ার দিকে ঝুঁকিয়ে দেন, যাতে ইসলামি জঙ্গিবাদের ক্রমবর্ধমান তৎপরতা মোকাবিলা করা যায়।

গোইতা ফরাসি সেনাদের দেশ থেকে বহিষ্কার করেন এবং রাশিয়ার ওয়াগনার গ্রুপের ভাড়াটে সেনাদের নিয়ে আসেন। বর্তমানে সেই গ্রুপের স্থলাভিষিক্ত হয়েছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ‘আফ্রিকা কর্পস’।

এদিকে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আফ্রিকার আরেক দেশ বুরকিনা ফাসোরও কূটনৈতিক টানাপোড়েন দেখা দেয়। দেশটির সামরিক সরকার যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে অবৈধ অভিবাসীদের গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানালে ওয়াশিংটন দেশটিতে ভিসা প্রদান স্থগিত করে।

বুরকিনা ফাসোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী কারামোকো জ্যাঁ-মারি ত্রাওরে প্রশ্ন তোলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত ‘চাঁদাবাজির’ কোনো কৌশল কিনা। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র তৃতীয় দেশের অভিবাসীদের তাদের দেশে গ্রহণ করার প্রস্তাব দিয়েছিল, যা তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন।

ট্রাম্প প্রশাসন অভিবাসন কঠোর নীতির অংশ হিসেবে আফ্রিকার দেশগুলোকে অবৈধ অভিবাসীদের গন্তব্য হিসেবে বিবেচনায় নিচ্ছে।

 

এন এস

সম্পর্কিত খবর