ব্যাঙ্ক ঋণে সুদের হার এক অঙ্কে আনার দাবি

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএসহ বিভিন্ন সংগঠনের ১৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করে এ দাবি জানান।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর, সংশ্লিষ্ট বিভাগের নির্বাহী পরিচালকসহ অন্য কর্মকর্তারা ছিলেন।
তারল্য সংকট ও সংকোচনমুখী মুদ্রানীতির প্রভাবে দেশে ব্যাংক ঋণের সুদহার এখন ১৫ থেকে ১৬ শতাংশে গিয়ে ঠেকেছে। উচ্চ এ সুদের প্রভাবে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ তলানিতে নেমে এসেছে। খেলাপি ঋণের হারও অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষতি কমাতে ব্যাংক ঋণের সুদহার এক অংকের ঘরে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা।
আজ (৯ অক্টোবর) দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএসহ বিভিন্ন সংগঠনের ১৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করে এ দাবি জানান। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর, সংশ্লিষ্ট বিভাগের নির্বাহী পরিচালকসহ অন্য কর্মকর্তারা ছিলেন।
বৈঠক শেষে এফবিসিসিআই মহাসচিব মো. আলমগীর বলেন, বর্তমানে দেশে সুদহার ১৪ শতাংশের ওপরে। পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা মুনাফাই করে ১০ থেকে ১১ শতাংশ। সুদের এ হার কোনো অবস্থাতেই ব্যবসাবান্ধব নয়। এ উচ্চ সুদের কারণে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ব বাজারে টিকে থাকা অত্যন্ত কঠিন।
বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশী পণ্যের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধরে রাখা, বিনিয়োগের স্বার্থে এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদহার ক্রমান্বয়ে কমিয়ে সিঙ্গেল ডিজিটে আনার অনুরোধ জানিয়েছি। এ সময় গভর্নর জানিয়েছেন, নীতি সুদহার এক অঙ্কে নেমে আসবে। সেটা আগামী মুদ্রানীতিতেই।
তিনি আরো বলেন, কভিড-১৯, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বন্যাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ক্ষতিগ্রস্ত ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা ও আর্থিক ব্যবস্থার পুনর্গঠনের লক্ষ্যে একটি কমিটি করা হয়েছে। সেই কমিটির মেয়াদ সেপ্টেম্বরে শেষ হয়ে গেছে। সেটা আরো ছয় মাস বাড়ানোর কথা বলেছি। একইসঙ্গে ৫০ কোটি টাকার নিচের ঋণ পর্যালোচনাপূর্বক নীতি সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে পৃথক আরেকটি কমিটি গঠনের জন্য প্রস্তাব করছি। এক্ষেত্রে গভর্নর জানিয়েছেন সমস্যা হবে না। তা চলমান থাকবে।
রফতানিমুখী শিল্পের ব্যাংকিং সমস্যা সমাধানের জন্য বিশেষ কমিটি গঠনের দাবি জানান তারা। তিনি বলেন, রফতানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো সময় সময় বিভিন্ন ধরনের ব্যাংকিং সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে যা তাৎক্ষণিক সমাধান হওয়া জরুরি।
এসব সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে উচ্চ পর্যায়ের একটি বিশেষ কমিটি করা যেতে পারে। এ কমিটিতে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএসহ রফতানি সংক্রান্ত অন্য বাণিজ্য সংগঠনের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। এ বিষয়ে গভর্নর রাজি হয়েছেন। একজন ডেপুটি গভর্নরকে দায়িত্ব দিয়েছেন। তার সঙ্গে এখন আমরা এসব বিষয়ে আলাপ করতে পারব।