ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন ১১ শতাংশ কমেছে

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সপ্তাহজুড়ে সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারদর কমার পাশাপাশি প্রধান সূচকের পতন দেখা গেছে। একইসঙ্গে দৈনিক গড় লেনদেন ১১ দশমিক ১৮ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে গত সপ্তাহে বাজার মূলধন কমেছে ১ দশমিক ০১ শতাংশ। আগের সপ্তাহে ৫ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে, আর গত সপ্তাহে ৪ কার্যদিবস লেনদেন হয়।

সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৬ দশমিক ৩৮ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৪৪ শতাংশ কমে ৫ হাজার ৯৪১ দশমিক ৬৬ পয়েন্টে স্থির হয়। ডিএসইএস বা শরিয়াহ সূচক ৬ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৫২ শতাংশ কমে এক হাজার ২৯৩ দশমিক ০৩ পয়েন্টে পৌঁছায়। অন্যদিকে ডিএস৩০ সূচক ৬ দশমিক ১৪ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশ বেড়ে দুই হাজার ৫৭ দশমিক ৭২ পয়েন্টে স্থির হয়। মোট ৪১২টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৩৩টির, কমেছে ২২৯টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৩৩ কোম্পানির শেয়ারদর। লেনদেন হয়নি ১৭টির। দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৪৯৬ কোটি ২৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছিল ৫৫৮ কোটি ৭৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ১১ দশমিক ১৮ শতাংশ।

গত সপ্তাহে ডিএসইর টপটেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ১৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে শেয়ারদর ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ বা ৪ টাকা ১০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি সর্বশেষ ৪৫ টাকা ২০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল একই। দিনজুড়ে ৩৬ লাখ ৮২ হাজার ৪৯১টি শেয়ার মোট ১১ হাজার ৬৭৮ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ১৫ কোটি ৯৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এদিন কোম্পানিটির শেয়ারদর সর্বনিম্ন ৪০ টাকা ৮০ পয়সা ও সর্বোচ্চ ৪৫ টাকা ২০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করে।

তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ১০ শতাংশ। এদিকে সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর ১ দশমিক ৭২ শতাংশ বা ৫০ পয়সা কমে প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ ২৮ টাকা ৬০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল একই। দিনজুড়ে ৭৩ লাখ ১৯ হাজার ১৫৯টি শেয়ার ৪ হাজার ৫৩৯ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ২১ কোটি ১২ লাখ টাকা। দিনভর শেয়ারদর সর্বনিম্ন ২৮ টাকা ৩০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ২৯ টাকা ৮০ পয়সায় হাতবদল হয়। আর গত এক বছরের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ারদর সর্বনিম্ন ১০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩৫ টাকা ৬০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করে।

ওষুধ ও রসায়ন খাতের এ কোম্পানিটি ২০১৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘বি’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। ৩০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ১১৯ কোটি ৮০ লাখ ১০ হাজার টাকা। কোম্পানিটির ১১ কোটি ৯৮ লাখ ৮৪৪ শেয়ার রয়েছে। ডিএসই থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্যমতে, কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে ২৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক ২৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৪৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ শেয়ার।

২০২৩ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য কোম্পানিটি কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩৭ পয়সা (লোকসান) এবং ৩০ জুন শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ৫ টাকা ৫৯ পয়সা। আর আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি কোনো নগদ অর্থপ্রবাহ হয়নি। ২০২২ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য কোম্পানিটি কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৫৭ পয়সা (লোকসান) এবং ৩০ জুন শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ৫ টাকা ৯৬ পয়সা। আর আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে এক পয়সা (লোকসান)। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করেও কোম্পানিটি কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। আলোচিত সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছিল ৭ পয়সা (লোকসান) এবং ৩০ জুনে শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়ায় ৬ টাকা ৫৩ পয়সা।

এর পরের অবস্থানগুলোয় থাকা যথাক্রমে শাইনপুকুর সিরামিকস লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ। পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ। পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ৮ দশমিক ৭০ শতাংশ। মিডল্যান্ড ব্যাংক লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ৭ দশমিক ৮১ শতাংশ। সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ। মালেক স্পিনিং মিলস লিমিটেডের বেড়েছে ৭ দশমিক ১৬ শতাংশ। প্রিমিয়ার সিমেন্ট মিলস লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ৬ দশমিক ৯২ শতাংশ। নিউলাইন ক্লথিংস লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ৬ দশমিক ৭৯ শতাংশ।