এক ভারতীয় যিনি তাঁর স্ত্রীকে দুটি বিষাক্ত সাপ দিয়ে হত্যা করেছিলেন, আজ তাঁকে যাবজ্জীবন সাজা শোনালেন আদালত।আদালতের কৌঁসুলিরা এই মামলাটিকে ‘বিরলতম’ আখ্যা দেন।
প্রসিকিউটররা জানান, সুরজ কুমার নামের ওই ব্যক্তি তাঁর স্ত্রী উথরাকে একটি বিষাক্ত রাসেল ভাইপার দিয়ে কামড়ে আহত করেন। যার কারণে ওই নারীকে ৫২ দিন হাসপাতালে থাকতে হয়।
যখন তিনি হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরলেন- সুরজ আরেকটি বিষধর কোবরা ছেড়ে দিলেন ঘুমন্ত স্ত্রীর শরীরে- যে সাপটি তিনি সংগ্রহ করেছিলেন একজন সাপুড়ের কাছ থেকে। আর সেই কোবরার বিষাক্ত ছোবল প্রাণ কেড়ে নেয় উথরার।
যদিও সুরজ দাবি করেছিলেন তিনি নির্দোষ তবে পুলিশ তার কল রেকর্ড থেকে জানতে পারে কোনো না-কোনোভাবে তাঁর যোগ রয়েছে স্ত্রীর মৃত্যুর সঙ্গে। তাঁর যোগাযোগ ছিল সাপুড়েদের সঙ্গে এবং স্ত্রীর মৃত্যুর আগে সে নিয়মিত সাপের নানারকম ভিডিও দেখত। ঘটনাটি কেরালার কোলাম-এর।
এর আগে, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট বলে, সাপের কামড়েই মৃত্যু হয় ওই নারীর। নিহতের পরিবার সন্দেহ করে ওই নারীর সঙ্গে অন্যায় কিছু হতে পারে। তাই তাঁরা পুলিশে অভিযোগ দাখিল করে। এর আগে ওই নারী তাঁর শ্বশুরবাড়িতে যৌতুকের জন্য হয়রানির শিকার হয়েছিলেন। যদিও সুরজকে যৌতুক হিসেবে অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার প্রদান করা হয়েছিল তবুও পুলিশের সন্দেহ ছিল- সুরজ সন্তুষ্ট ছিলেন না। এবং এই অসন্তুষ্টির কারণেই তিনি তাঁর স্ত্রীকে হত্যা করে থাকতে পারেন।
এর পর সুরজকে আটক করা হয় এবং তাঁর বিরুদ্ধে হত্যার অবিযোগ আনা হয়।
নিজের স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করে সুরজ। জানায়, প্রথমে স্ত্রীকে তিনি ঘুমের ওষুধ খাওয়ান ও পরে তাঁর শরীরে একটি বিষাক্ত কোবরা ছেড়ে দেন। পুলিশ অবাক হয়ে লক্ষ করে, পুলিশের কাছে বক্তব্য দেওয়া ও বিচার চলাকালীন কখনোই তাঁকে অপরাধবোধে ভুগতে দেখা যায়নি।
তদন্ত দলটির মুখপাত্র পুলিশ সুপার এস হরিশংকর বলেন, আমরা উপলব্ধি করতে পেরেছি যে সুরজ একজন ঘাগু অপরাধী। তাঁর কোনো অপরাধবোধ নেই। আমাদের উপস্থাপন করা তথ্য-প্রমাণ ব্যতীত আর কিছুই তিনি নিজে থেকে আমাদের বলেননি। এবং সে খুব হিসেব করে তাঁর বিবৃতি দিয়েছে।
প্রসিকিউটররা জানান, আমরা এই বিরল হত্যার জন্য অভিযুক্তের মৃত্যুদণ্ড চেয়েছিলাম। তবে আদালত তাঁকে যাবজ্জীবন সাজা শোনান।
সূত্র : সিএনএ