শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ

শেয়ারবাজার সবার জন্য হলেও না বুঝে এখানে বিনিয়োগ করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। তার মতে, না বুঝে শেয়ারবাজারে এলে ঠকতে হবে। তখন অন্যকে দোষারোপ করে কোনো লাভ হবে না। এজন্য বিনিয়োগকারীদের আগে থেকেই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় শিক্ষা নেয়া ও সচেতন হওয়ার পরামর্শ তার। বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত গতকালের এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান থেকে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ) ও বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেট (বিএএসএম) যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ‘সচেতন বিনিয়োগ, টেকসই শেয়ারবাজার’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএসইসি চেয়ারম্যান। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ ও ডিএসইর চেয়ারম্যান মো. ইউনুসুর রহমান।

অনুষ্ঠানে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, নিশ্চয় সবাই রিটার্নের জন্য শেয়ারবাজারে আসেন। তবে ভুল সিদ্ধান্তের কারণে কারো কারো ক্ষতিও হয়ে যায়। লাভ-ক্ষতি হবেই। পৃথিবীর সব ব্যবসা-বাণিজ্যেই লাভ-ক্ষতি হয়। এ কারণেই সবাই ব্যবসা করে না। তিনি আরো বলেন, ব্যবসায় লাভ-ক্ষতি ধর্মে হালাল। তবে ব্যবসা করতে গিয়ে প্রতারণা বা মিথ্যার আশ্রয় নেয়া হারাম। ব্যবসা-বাণিজ্য করতে গিয়ে অনেকে অসতর্ক হয়ে যায়। এছাড়া আদর্শের জায়গা থেকে সরে যায়। তাদের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে সমাজের অনেক বড় ক্ষতি করে ফেলে। এ জিনিসগুলো আমাদের শেয়ারবাজারেও দেখা যায়। তাদের মতো অল্প কিছু লোকের ভুলে বা ইচ্ছাকৃত অসৎ উদ্দেশ্যের কারণে আমাদের অনেকের অসম্মান হয়।

বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিষয়ে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, আমাদের বাজার সুন্দরভাবে চলছে। লেনদেন বাড়ছে। অন্যান্য বিষয় সুন্দরভাবে চলছে। আমরা ফ্রন্টিয়ার মার্কেট থেকে ইমার্জিং মার্কেটে যাওয়ার পথে আছি। সেখানে আমাদের বাধা-বিপত্তি থাকবে। এসব থাকবেই। সেগুলোকে কাটিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

ডিবিএসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, কীভাবে শেয়ারবাজারে লেনদেন বাড়ানো যায়, কীভাবে মানুষকে বাজারমুখী করা যায়, কীভাবে বিনিয়োগে প্রলুব্ধ করতে পারে—এ বিষয়ে কাজ করতে হবে। কীভাবে নতুন নতুন পণ্য বাজারে আনা যায়, তা নিয়ে কাজ করতে হবে। আমরা ডেরিভেটিভস ও কমোডিটি নিয়ে চাপ দিতে চাই না। আপনারা নিজেরাই উদ্যোগ নেবেন। অন্যথায় এ বাজারকে বড় করা যাবে না। এক্ষেত্রে ডিএসই ও সিএসই সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারে বলেও জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন ডিএসইর এমডি তারিক আমিন ভূঁইয়া। এছাড়া আলোচক ছিলেন ডিবিএর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি রোজারিও ও ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএএসএমের ডিজি ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী ও ডিবিএর ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সাজেদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডিবিএ সভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসেন।