দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল ও পৃথিবীর ঘন জনবসতিপূর্ণ শহরগুলোর একটি ঢাকা। এটি অপরিকল্পিতভাবে এগোচ্ছে। অপরিকল্পিত এ নগরায়নে ভূমিকম্প হলে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকিতে রয়েছে এ নগরী।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
দ্য আরবান থিঙ্কারস ক্যাম্পাস (ইউটিসি) শীর্ষক এ আয়োজন করে বুয়েট। ইউএন-হ্যাবিট্যাটের আওতাধীন ওয়ার্ল্ড আরবান ক্যাম্পেইনের (ডব্লিউইউসি) সহযোগী সদস্য এ প্রতিষ্ঠানটি টানা তৃতীয়বারের মতো এ আয়োজন করল।
বুয়েট ভিসি অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলামের সভপতিত্বে সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন বুয়েট স্থাপত্য বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. নাসরীন হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আর্কিটেক্টস ইন্সটিটিউটের সভাপতি স্থপতি জালাল আহমেদ। সম্মেলনে নির্ধারিত বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেন অধ্যাপক ড. শায়ের গফুর, অধ্যাপক ড. ফারিদা নিলুফা ও অধ্যাপক ড. খন্দকার সাব্বির আহমেদ।
নগরবিষয়ক গবেষক, পেশাজীবী, নীতি-নির্ধারক ও সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের গঠনমূলক আলোচনা ও মতবিনিময়ের উন্মুক্ত মঞ্চ ইউটিসি। এবার ইউটিসির ফলাফলের সারাংশ আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে আবুধাবিতে অনুষ্ঠিতব্য ওয়ার্ল্ড আরবান ফোরাম ১০-এ উপস্থাপিত হবে। সারাংশে উন্নয়ন পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয়ের অগ্রাধিকার ও অংশীদারদের ভূমিকা নির্ধারণের মাধ্যমে টেকসই নগর উন্নয়ন নিশ্চিতকরণের একটি রোডম্যাপ প্রস্তাব করা হবে।
সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঢাকাসহ দেশের কিছু অঞ্চল ভূমিকম্প ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। সিবিএফবির ২০০৯-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী ঢাকাতে যদি ৬ মাত্রার ভূমিকম্প হয় তাহলে এ শহরের শতকরা ৫৬ ভাগ ভবন ধসে পড়বে, ৫ শতাংশ জিডিপি হারাবে। এ পরিসংখ্যান করা হয়েছিল ১০ বছর আগে। কিন্তু বর্তমানে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এর প্রায় দ্বিগুণ হবে। তাই আমাদের জরুরিভাবে কাঠামোগত কার্যকর পরিমাপ এবং উপযুক্ত সাড়া দান পদ্ধতির দিকে গুরুত্ব দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এখনই আমাদের উপযুক্ত সময় যে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ঢাকা শহরকে পরিবেশবান্ধব, সবার বসবাস উপযোগী করে তোলার প্রচেষ্টা চালানোর।
অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি আশা করি আমাদের এ সম্মেলন শেষে আমরা বিভিন্ন এক্সপার্টদের মাধ্যমে কিভাবে ভালো একটি ভালো শহর, পাশাপাশি একজন ভালো নাগরিক হওয়া যায় তার নির্দেশনা পাব।
এ সম্মেলনের শিরোনাম ‘অ্যাপ্রোচ টু ইন্টার-স্কেলার রেজিলিয়েন্স-সেটেলমেন্ট লিংকেজ’। হাউজিং অ্যান্ড সেটেলমেন্ট, আরবান ডিজাইন অ্যান্ড ল্যান্ডস্কেপ ও এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড এনার্জি- এ তিন প্রাসঙ্গিক বিষয়ের সম্মেলনে আলোচনা চলছে। অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে স্থাপত্য বিভাগ প্রাঙ্গণে ৬-৮ ডিসেম্বর ৩ দিনব্যাপী প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।
এ আয়োজনে বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের সঙ্গে সহযোগী হিসেবে ২০টি সরকারি-বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান যুক্ত রয়েছে। এর উলে¬খযোগ্য হল স্থাপত্য অধিদফতর, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, রাজউক, নগর উন্নয়ন অধিদফতর, এলজিইডি, বিশ্বব্যাংক, হ্যাবিট্যাট ফর হিউম্যানিটি বাংলাদেশ, ইডকল, এইচবিআরআই, হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন, বাংলাদেশ হাউজিং ফোরাম, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব আর্কিটেক্টস (ইউআইএ), ইন্সটিটিউট অব আর্কিটেক্টস বাংলাদেশ (আইএবি), বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি), বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।