পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় বাল্য বিয়ের আয়োজন পণ্ড হলেও বরকে নিয়ে পালিয়ে গেছে কনে। এদিকে, বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় বরের বাবা বকুল হোসেনকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যার দিকে উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মাদ নাহিদ হাসান খাঁন এর কার্যালয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিপাশা হোসাইন অপ্রাপ্তবয়স্ক বর-কনের উপস্থিতিতে বরের বাবাকে এই জরিমানা করেন। পাশাপাশি বর-কনের পূর্ণ বয়স না হওয়া পর্যন্ত স্ব-স্ব পরিবারের জিম্বায় থাকার আদেশ দেন। কিন্তু এমন আদেশ শোনার পর অফিস থেকে বের হয়ে কনে বরের হাত ধরে সকলের উপস্থিতিতে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পৌর সদরের ভদ্রপাড়ার বাসিন্দা মানিক হোসেনের মেয়ে ও ৯ম শ্রেণির ছাত্রী মনিকা খাতুনের (১৪) সঙ্গে পার্শ্ববর্তী এলাকার হারোপাড়ার বাসিন্দা বকুল হোসেনের ছেলে ও ১০ম শ্রেণির ছাত্র বিপ্লবের (১৬) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর তারা বাড়ি থেকে গোপনে একাধিকবার পালিয়ে বিয়ে করতে গেলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় তাদের স্ব-স্ব পরিবারের কাছে ফিরিয়ে আনা হয়।
কিন্তু গত ২৫ জানুয়ারি আবারও গোপনে তারা বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে পাশ্ববর্তী থানায় বয়স পরিবর্তন করে বিয়ে করে। পরে গতকাল সোমবার ছেলের হারোপাড়াস্থ নিজ বাড়িতে তার বাবা বকুল হোসেন তাদের বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। বিষয়টি জানতে পেরে ওই বাল্য বিয়ে বন্ধে মনিকার বাবা মো. মানিক হোসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশের সহায়তায় বর-কনেসহ বরের পরিবারের লোকজনকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে হাজির করা হলে বাল্য বিবাহ নিরোধ আইন-২০১৭ এর ৮ ধারা অনুযায়ী ছেলের বাবাকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বিপাশা হোসাইন পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন। পাশাপাশি বর-কনের প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়া পযর্ন্ত স্ব-স্ব পরিবারের কাছে থাকার নির্দেশ দেন। কিন্তু অফিস থেকে বের হয়েই কনে বরের হাত ধরে সবার সম্মুখে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
পরে মেয়ের বাবা মানিক হোসেন অভিযোগ করে বলেন, তার মেয়ে নাবালিকা। তাই সে কিছু বোঝে না। তাকে ফুঁসলিয়ে ভুল পথে নেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খাঁন বলেন, ছেলেমেয়ে নাবালক হওয়ার কারণে তারা সাবালক না হওয়া পর্যন্ত উভয়পক্ষকে বুঝিয়ে স্ব-স্ব পরিবারে জিম্বায় থাকতে নিদের্শ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বাল্য বিয়ের আয়োজন করায় ছেলের বাবাকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বিপাশা হোসাইন পাঁচ হাজার টাকার জরিমানার আদেশ দিয়েছেন।