জাকারিয়া মাহমুদ সোহান; বয়স ৩০ বছর। রাজধানীর উত্তর মুগদা পাড়া এলাকায় বসবাস করেন। কিছু দিন আগে বিয়ে করে সংসার শুরু করেছেন তিনি। ৯ বছরের এক শিশুকে ছয় মাস ধরে ধর্ষণের অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করেছে মুগদা থানা পুলিশ। বুধবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, একটি ছোট মোবাইলের দোকান রয়েছে তার। সেই দোকানের মধ্যে তিনি ঘণ্টায় ১০ টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন বয়সী শিশুদের মোবাইলে গেম এবং ইউটিউব ভিডিও দেখতে দিতেন। এটা ছিল তার ভিন্ন রকমের একটি ব্যবসা। মূলত এই ব্যবসার আড়ালে তিনি তার দোকানে মোবাইলে গেম খেলতে যাওয়া শিশুদের ফুসলিয়ে বা জোর করে ‘ধর্ষণ’ করতেন।
এমনি এক ৯ বছর বয়সী শিশুকে গত ৬ মাস ধরে ধর্ষণ করে আসছিলেন বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার। সেই শিশুর পরিবারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে গতকাল গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর শিশুর বাবা বাদী হয়ে মুগদা থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
যেভাবে ধর্ষণের শিকার
এই ঘটনার দায়ের হওয়া মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ১৮ অক্টোবর ওই শিশু মাদ্রাসা থেকে দুপুর ২টার সময় বাসায় চলে আসে। এরপর সে বাসার পাশের একটি দোকানে চকলেট কিনতে যায়। তখন অভিযুক্ত জাকারিয়া তাকে চকলেট দেওয়ার নাম করে দোকানের ভেতরে নিয়ে যায়। এরপর দোকানের ভেতরে মেঝেতে ফেলে ধর্ষণ করে।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়েছে, ওই শিশুর বাবা আরও অভিযোগ করেছেন এর আগেও একাধিকবার জাকারিয়া দোকানের ভেতরেই ওই শিশুকে ধর্ষণ করেছেন। এ ছাড়াও ওই বিল্ডিংয়ের পাঁচতলার সিঁড়িতেও ওই শিশুকে একাধিকবার নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেছে।
পরে ওই শিশুকে বার বার ভয়ভীতি দেখাতেন জাকারিয়া। যেন বিষয়টি কাউকে না বলে। কিন্তু কয়েক দিন ধরে ওই শিশুর মা তাকে নীরব থাকতে দেখে কারণ জানতে চাইলে মায়ের কাছে সব খুলে বলে শিশুটি।
ধর্ষকের শাস্তি চাইলেন বাবা
এই ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে ওই শিশুর বাবা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জাকারিয়া তার দোকানে আমার মেয়ের মতো অনেক মেয়ের সঙ্গে এমন কাজ করেছে। ওর কঠিন শাস্তি চাই।’
ব্যবসার আড়ালে শিশু ধর্ষণ
মুগদা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শামীম আকতার সরকার গণমাধ্যমকে জানান, ঘটনার পরে জাকারিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী শিশুর বাবা। জাকারিয়াকে আজ বৃহস্পতিবার আদালতে নিয়ে রিমান্ড চাওয়া হয়।এরপর আদালত এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তার জাকারিয়া তার দোকানে অদ্ভুত রকমের একটা ব্যবসা করত। ১০ টাকা ঘণ্টায় মোবাইল ভাড়া দিতো শিশুদের। শিশুরা তার দোকানে বসেই মোবাইলে গেম এবং ইউটিউব দেখত। তখন যাকে তার পছন্দ হতো সেই শিশুর সঙ্গে সে এমন অপকর্ম করত।