ইরান সরকার হঠাৎ পেট্রলের দাম বৃদ্ধি এবং সবার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ পেট্রল বরাদ্দ করার রেশন ব্যবস্থা কার্যকর করার ঘোষণা দেয়ার পর থেকে সেদেশে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত সংঘাতে অন্তত ২ জন মারা গেছে।
পেট্রল থেকে ভর্তুকি উঠিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর শুক্রবার পেট্রলের দাম অন্তত শতকরা ৫০ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
দেশটির কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা দরিদ্রদের জন্য অর্থ বরাদ্দ করার পরিকল্পনা থেকে পেট্রলের দাম বাড়িয়েছে।
২০১৫ সালে ওয়াশিংটন ইরান পরমাণু চুক্তি থেকে সরে আসার পর যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর নানারকম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর থেকে অর্থনৈতিকভাবে বেশ ভুগতে হচ্ছে ইরানকে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনা জানিয়েছে, শুক্রবার বিক্ষোভকারীরা জালানি মজুদ থাকা একটি গুদামে হামলা চালিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দিতে চাইলে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে একজন মারা যায়।
সিরজান শহরের এই ঘটনা বাদেও বেহবাহান শহরে একজন মারা গেছে। এছাড়াও রাজধানী তেহরানসহ কেরমানশাহ, ইসফাহান, তাবরিজ, করদজ, শিরাজ, ইয়াজদ, বোশেহর ও সারি শহরে বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে।
অনেক শহরে ক্ষুব্ধ গাড়িচালকরা রাস্তার মাঝখানে গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ করে বা গাড়ি রাস্তায় ফেলে রেখে প্রতিবাদ প্রকাশ করেছেন।
সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট হওয়া ভিডিও থেকে দেখা যায় রাজধানী তেহরানের গাড়িচালকরা ইমাম আলী হাইওয়েতে গাড়ি থামিয়ে পুলিশকে বিক্ষোভে যোগ দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।
প্রকাশিত কিছু ছবিতে দেখা যায় দক্ষিণানঞ্চলীয় শহর শিরাজের কয়েকটি পুলিশ স্টেশনে আগুন জ্বলছে।
এ নিয়ে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে কৌঁসুলি মোহাম্মদ জাফর মোন্তাজেরি ‘কিছু উচ্ছৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী’কে দায়ী হিসেবে উল্লেখ করেন।
তিনি এমনও বলেন যে বিক্ষোভকারীদের ‘দেশের বাইরে’র শক্তির সাথে সম্পৃক্ত।
ইরানে নতুন আইন অনুযায়ী প্রত্যেক মোটরযান মালিক ১৫ হাজার রিয়াল প্রতি লিটার দামে (.১৩ ডলার, .১০ পাউন্ড) মাসে ৬০ লিটার পেট্রল কিনতে পারবেন।
এরই নির্ধারিত পরিমাণের পর প্রতি লিটার পেট্রলের দাম পড়বে ৩০ হাজার রিয়াল। এর আগে, একজন ব্যক্তি প্রতি লিটার ১০ হাজার রিয়াল দামে ২৫০ লিটার পর্যন্ত পেট্রল কিনতে পারতো।
পেট্রলে ভর্তুকি বাদ দিয়ে যে পরিমাণ নগদ অর্থ আয় করবে সরকার, তা দিয়ে নিম্ন আয়ের দরিদ্র পরিবারকে নগদ অর্থ সহায়তা দেয়া হবে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি শনিবার বলেছেন ৭৫% ইরানি বর্তমানে ‘চাপের মুখে’ জীবনধারণ করছেন এবং পেট্রলের দাম বাড়ানোর সরকার যে অতিরিক্ত আয় করবে তা ইরানের কোষাগারে না গিয়ে ঐ জনগণের কাছে পৌঁছাবে। সূত্র: বিবিসি।