‘ক্যাঙ্গারু কমিশন’ বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে নয়

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে ক্যাঙ্গারু কমিশন গঠন করা হলে সেটি কোনো কাজেই আসবে না বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি।  বৃহস্পতিবার সংস্থার এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, ক্রমবর্ধমান খেলাপি ঋণ ও ব্যাপক অনিয়মে জর্জরিত ব্যাংকিং খাতের সংস্কারের লক্ষ্যে ব্যাংকিং কমিশন করার সিদ্ধান্ত ইতিবাচক। কিন্তু বহুল প্রত্যাশিত কমিশনটি বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে গঠন করা হলে তা একটি অর্থহীন ও অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত হবে। বিবৃতিতে বলা হয়, স্বার্থের দ্বন্দ্বের কারণে কমিশন কর্তৃক নিরপেক্ষ ও নির্মোহভাবে ব্যাংকিং পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং কার্যকর সুপারিশ প্রণয়ন সম্ভব হবে না। বলে তাই সম্পূর্ণ স্বাধীন একটি কমিশন গঠনের আহ্বান জানাচ্ছে টিআইবি।

ড. ইফতেখাররুজ্জামান আরো বলেন, ব্যাংকিং খাত সংস্কারে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেতৃত্ব একটি ব্যাংকিং কমিশন গঠন করতে যাচ্ছে সরকার। এ খাতের সংস্কারে টিআইবিসহ বিভিন্ন মহলের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে উক্ত সিদ্ধান্ত হওয়া ইতিবাচক। কিন্তু আমরা মনে করি বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে এই কমিশন গঠন হবে দায়সারা, অর্থহীন ও অপরিণামদর্শী একটি সিদ্ধান্ত ।

কেননা,ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে থাকা ব্যাংকিং খাত নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংক যেমন নিয়ন্ত্রকের কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারেনি, তেমনি অনেক ক্ষেত্রে যারা এ সংকটের জন্য দায়ী তাদের দ্বারাই প্রভাবিত হবার পরিচয় দিয়েছে। তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের নেতৃত্বে ব্যাংকিং কমিশন গঠন করা হলে তা স্বার্থের সংঘাত তৈরি করবে এবং কমিশন গঠনের মূল উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং সার্বিকভাবে ব্যাংকিং খাতই কায়েমি স্বার্থবাদী মহলের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেন ড. ইফতেখারুজ্জামান।

তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতে কাঙ্খিত সংস্কারের জন্য গঠিত কমিশন হতে হবে স্বাধীন যা এ খাত সংশ্লিষ্ট নিরপেক্ষ সুখ্যাতিসম্পন্ন ও গ্রহণযোগ্য বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠন করতে হবে। যারা বাস্তবতার নিরিখে সম্পূর্ণ প্রভাবমুক্ত ও নির্মোহভাবে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা পেশ করবেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং সরকার কায়েমি স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে তা বাস্তবায়ন করবে। অন্যথায় এ ধরণের ক্যাঙ্গারু কমিশন গঠন কোনো কাজেই আসবে না।