নাম না জানা কোলাহলমুক্ত একটি এলাকা। মোরগ কিংবা চড়ুই পাখির ডাক ছাড়া আর কোনো সাড়াশব্দ নেই। এখানকারই একটি বেসমেন্টে পালিয়ে বসবাস করছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পিরাজ আতা শরিফি। আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির বিশেষ প্রহরী ছিলেন তিনি।
তালেবানদের ভয়ে ইঁদুরের গর্তে ঢুকে থাকতেন, যদি বিশালদেহী না হতেন। কারণ, তাকে হন্যে হয়ে খুঁজছে তালেবান। তার খোঁজ দিতে ১০ লাখ আফগানি (৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা প্রায়) পুরস্কার ঘোষণা করেছে তালেবান সরকার। গোপন জায়গা থেকেই ডেইলি মেইলকে তিনি বলেন, ‘আমি দেখেছি প্রেসিডেন্ট টাকা নিয়ে পালিয়েছেন।’
তার চারপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে সাদা চালের বস্তা, প্লাস্টিকের বালতি, কেতলি, পাখির খালি খাঁচা, বিদ্যুতের কিছু সরঞ্জাম এবং আরও কিছু আসবাবপত্র। এর মধ্যেই তার ছিটেফোঁটা ঘুম, তা-ও যদি আসে। ১৫ আগস্টের পর থেকেই পলাতক জীবনযাপন করছেন তিনি।
অথচ এই পাঁচ মাস আগেও ব্রিটেনের সবচেয়ে সিনিয়র সৈনিক জেনারেল স্যার নিক কার্টারের সঙ্গে এক টেবিলে বসে চা খেয়েছেন কাবুল সম্মেলনে। প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি পালিয়ে যাওয়ার পর তালেবানদের হাত থেকে বাঁচতেই নিরন্তর চেষ্টা তার। একের পর এক মেইল করে যাচ্ছেন বিভিন্ন দেশে আশ্রয় চেয়ে। প্রতিটি মেইলের জবাব দেখেই তিনি হতাশ আর হতাশ।
এদিকে কাবুলজুড়ে তালেবান পোস্টার ছেড়ে দিয়েছে-‘তিনি রাষ্ট্রপতির বিশেষ প্রহরী ছিলেন, তার কাছে ৩০০টি অস্ত্র আছে। আপনি যদি তার অবস্থান সম্পর্কে জানেন, তাহলে আফগানিস্তানের ইসলামিক আমিরাতকে জানানো উচিত। এ জন্য আপনার জন্য পুরস্কার থাকবে এক মিলিয়ন আফগানি।’ আতা শরিফি বলেন, ‘ওরা মনগড়া কথা বলছে। আমার কাছে একটি অস্ত্র আছে। আর একটি গুলি রেখেছি আমার জন্য। ওরা কোনোভাবে আমার কাছে পৌঁছে গেলে এটা দিয়ে নিজেকে হত্যা করব।’
ক্ষোভ আর হতাশা জানিয়ে আতা বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। আমাকে বিপদের মধ্যে ঠেলে দিয়ে পালিয়েছেন। তিনি জনসাধারণের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার নিয়ে চলে গেছেন-একবিন্দুও মিথ্যা নয়, আমি দেখেছি বস্তাগুলো হেলিকপ্টারে তুলে নিয়ে পালিয়েছেন। বস্তাগুলোতে তো আর চাল কিংবা আটা ছিল না। আমার কাছে সিসিটিভি ফুটেজ আছে।