ফারইস্টের শহিদকে নিয়ে ক্ষোভের আগুন!

ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্সের শহিদুল ইসলামের সাক্ষাৎকার ঘিরে ফেসবুকে ক্ষোভের আগুন ঝরছে।
অতীতের সমস্ত অনিশ্চয়তা কাটিয়ে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স এখন ক্রমবিকাশমান অগ্রগতির পথে—এই শিরোনামে ছাপা হয়েছে কোম্পানির ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. শহিদুল ইসলামের এক সাক্ষাৎকার। কিন্তু পত্রিকায় প্রকাশিত ওই সাক্ষাৎকারটি ফারইস্ট লাইফের একটি ফেসবুক পেজ- এ পোস্ট হতেই বীমা গ্রাহক ও সাধারণ পাঠকদের তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা সাক্ষাৎকারের কপিতে একের পর এক নেতিবাচক মন্তব্যে ভরে ওঠে কমেন্টবক্স। অনেকে অভিযোগ করেন, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্সের অগণিত গ্রাহক বছরের পর বছর ধরে বীমা দাবি (ক্লেইম) না পেয়ে ভোগান্তিতে রয়েছেন।
তাহমিনা আক্তার নামে একজন মন্তব্য করেছেন, “জীবনে সবচেয়ে বড় ভুল করলাম ফারইস্টে বিমা করে।”
ইয়াসিন চৌধুরী লিখেছেন, “হুমুন্দি কয় কিরে?”
পারভেজ হোসেন আলভি একই সুরে লিখেছেন, “হুমুন্দি কয় কিরে? আমার টাকা এখনও পাইনি।”
জয়নাল নামে একজন মন্তব্য করেছেন, “অগ্রগতি কী হয়েছে ভাই? শালী আর দুলাভাইয়ের আধিপত্য, সজনপ্রীতি, দুর্নীতি, টাকা আত্মসাৎ—এসব না থামলে ফারইস্ট ঘুরে দাঁড়াবে না। ৪-৫ বছর ধরে গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করছে, উলটপালট লেখালেখি করে বিভ্রান্ত করবেন না।”
আবু জাফর মিজবা মন্তব্য করেছেন, “শতভাগ মিথ্যা কথা। ওনি একজন মূর্খ এমডি ছিলেন। ওনার সময়েই ফারইস্টের সবচেয়ে বেশি অধঃপতন হয়েছে।”
ইব্রাহীম কামাল লিখেছেন, “কথায় নয়, কাজে প্রমাণ করুন। তেলবাজ কর্মকর্তারা পরিচালকদের দুর্নীতির সুযোগ করে দিয়েছে। পুরো বীমা শিল্পটাই শেষ করে দিয়েছেন আপনারা।”
সামসুল আলম জাকারিয়া মন্তব্য করেছেন, “অতীতের বিমা দাবি পরিশোধ করে তারপর আরামের গল্প বলুন। মাঠকর্মীরা কষ্ট করে পলিসি বিক্রি করে, আর হেড অফিসে টাকা হাওয়া হয়—এটাই আসল সমস্যা।”
হাকিম নামের এক ব্যক্তি লিখেন, “দালালি আর করিস না, মাইর একটাও মাটিতে পড়বে না!!”
এমন অসংখ্য সমালোচনামূলক মন্তব্যে ভরে গেছে ফেসবুকে পোস্ট করা সেই সাক্ষাৎকার।
বীমা খাতের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্সের লুটপাট, অভ্যন্তরীণ সংকট, দুর্নীতি, অনিয়ম ও ব্যবস্থাপনায় অদক্ষতার কারণে কোম্পানিটির ভাবমূর্তি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গ্রাহকদের দাবি টাকা পরিশোধে বিলম্ব এবং অভিযোগ নিষ্পত্তিতে অনীহা প্রতিষ্ঠানটির ওপর আস্থার সংকট আরও গভীর করেছে।
এদিকে কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে পারিবারিক আধিপত্য, পদায়ন নিয়ে পক্ষপাতমূলক সিদ্ধান্ত এবং প্রভাবশালী পরিচালকদের প্রভাব বিস্তারে ধ্বংসের কিনারায় পৌঁছানো ফারইস্ট নিয়ে বীমা খাতে নানামুখী অসন্তোষ তৈরি করেছে বলে জানা গেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা না ফিরলে “অগ্রগতির পথে” দাবি কেবল কথার মধ্যে সীমাবদ্ধই থাকবে। এবং সাধারণ গ্রাহকদের মাঝে এভাবে ক্ষোভ বাড়তেই থাকবে।
এ বিষয় নিয়ে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্সের শহিদুল ইসলামের মন্তব্য জানতে ফোন করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।