ছেঁড়া-পোড়া নোটের বিনিময়মূল্য নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নীতিমালা

ছেঁড়া, পোড়া বা বিভিন্ন কারণে নষ্ট হওয়া প্রচলিত টাকার নোটের বিনিময়মূল্য ফেরত দেওয়ার বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন নীতিমালা ঘোষণা করেছে। এখন থেকে এ নীতিমালার আওতায় গ্রাহকরা ব্যাংক থেকে নষ্ট হওয়া নোটের বিনিময়মূল্য ফেরত পাবেন।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
নীতিমালা অনুযায়ী কোনো নোটের ৯০ শতাংশের বেশি বিদ্যমান থাকলে ওই নোটের বিপরীতে গ্রাহক মূল্যমানের পুরো অর্থ ফেরত পাবেন। ক্ষতিগ্রস্ত নোটের ৭৫ শতাংশের বেশি থেকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত থাকলে নোটের মূল্যমানের ৭৫ শতাংশ অর্থ ফেরত পাবেন। নষ্ট নোটের ৫১ শতাংশের বেশি থেকে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত থাকলে মূল্যমানের ৫০ শতাংশ অর্থ ফেরত পাবেন। কোনো নোটের ৫১ শতাংশের কম থাকলে ওই নোটের বিপরীতে গ্রাহক কোনো অর্থ পাবেন না।
এই সার্কুলারের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক নোট প্রত্যর্পণ প্রবিধান ২০২৫ বিধিমালা কার্যকর হয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক নোট রিফান্ড রেগুলেশনস-২০১২ বাতিল করা হলো।
আগে ছেঁড়া ও পোড়া নোট বদলের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট বিধান ছিল না। এখন তা সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে। নোটের কত অংশ থাকলে কত টাকা পাওয়া যাবে তা এবারের বিধানে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, নানা কারণে প্রচলিত নোট ক্ষতিগ্রস্ত বা নষ্ট হয় কিংবা পুড়ে যায়। এসব নোট কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা অফিসসহ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে বদল করে নেওয়া যায়। প্রতিটি ব্যাংকের শাখায় এখন ছেঁড়া নোট বদল করে দিচ্ছে। তবে সব নোটের পুরো মূল্য পাওয়া যায় না। কেবল কোনো ক্ষতিগ্রস্ত, কিন্তু নোটের ৯০ শতাংশের বেশি রয়েছে, এমন নোটের বিনিময়মূল্য পুরোটাই পাওয়া যাবে। এসব ক্ষেত্রে নোট তাৎক্ষণিকভাবে বদল করে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া অন্য সব ছেঁড়াফাটা নোটও তাৎক্ষণিকভাবে বদল করে দেওয়া হয়।
সার্কুলারে বলা হয়, কোনো নোট একাধিক খণ্ডে বিভক্ত হয়ে পড়লে সেক্ষেত্রে নোটের দুই প্রান্তের নম্বর অভিন্ন থাকলে এবং নোটের কমপক্ষে ৬০ শতাংশ বিদ্যমান থাকলে মোট মূল্যের বিপরীতে ৫০ শতাংশ অর্থ পাওয়া যাবে। পোড়া নোট অখণ্ডিত থাকলে এবং এর আয়তন কমপক্ষে ৫১ শতাংশ হলে বা নোট পুড়ে একাধিক খণ্ড হয়ে গেলে দুই প্রান্তের নম্বর মিলতে হবে। একত্রিত খণ্ডের আয়তন কমপক্ষে ৬০ শতাংশ হলে মোট মূল্যের ৫০ শতাংশ অর্থ পাওয়া যাবে।
সার্কুলারে বলা হয়, ক্ষতিগ্রস্ত নোটের বিনিময়মূল্য ব্যাংকগুলো থেকে সমস্যা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে গ্রাহক আবেদন করতে পারবে। গ্রাহকের আবেদন ব্যাংক নিষ্পত্তি করতে না পারলে এটি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে পাঠাবে। সেখান থেকেও বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে না পারলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠাবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে।