বিনিয়োগকারীর বিরোধ দ্রুত নিষ্পত্তিতে নতুন বিধিমালা অনুমোদন

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারী, স্টক ব্রোকার, স্টক ডিলার ও ইস্যুয়ার কোম্পানির মধ্যে উদ্ভূত বিরোধ দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে দুটি নতুন বিধিমালা অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
‘ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (সেটেলমেন্ট অব ডিসপিউট) রেগুলেশনস, ২০২৫’ এবং ‘চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সেটেলমেন্ট অব ডিসপিউট) রেগুলেশনস, ২০২৫’ নামের এই দুই বিধিমালা অনুমোদন দেওয়া হয় (৭ অক্টোবর) বিএসইসির ৯৭৬তম কমিশন সভায়। সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিশনের চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ।
নতুন এই বিধিমালার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীর স্বার্থ সুরক্ষায় তৈরি হলো একটি কাঠামোবদ্ধ ও সময়সীমাবদ্ধ প্রক্রিয়া। এখানে বিরোধ নিষ্পত্তি হবে দুই ধাপে—প্রথমে আলোচনার মাধ্যমে (মেডিয়েশন) এবং প্রয়োজনে পরবর্তী ধাপে নিরপেক্ষ সালিসির (আরবিট্রেশন) মাধ্যমে।
বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, এই নিয়ম বাস্তবায়ন হলে বিনিয়োগকারী ও ব্রোকার–ডিলার বা ইস্যুয়ার কোম্পানির বিরোধ দ্রুত নিষ্পত্তি হবে। এতে বিনিয়োগকারীর ভোগান্তি কমবে, আর কমিশনের সার্ভেইল্যান্স বিভাগের চাপও হ্রাস পাবে।
নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, কোনো বিনিয়োগকারীর সঙ্গে স্টক ব্রোকার, স্টক ডিলার বা ইস্যুয়ার কোম্পানির লেনদেনসংক্রান্ত বিরোধ দেখা দিলে প্রথমে সংশ্লিষ্ট স্টক এক্সচেঞ্জে আবেদন করতে হবে। এরপর স্টক এক্সচেঞ্জ একটি মেডিয়েশন বোর্ড গঠন করবে, যারা উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে সমঝোতার চেষ্টা করবে। যদি মেডিয়েশন ব্যর্থ হয়, তাহলে বিষয়টি আরবিট্রেশন ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে। ট্রাইব্যুনাল নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রায় দেবে, যা বাধ্যতামূলকভাবে কার্যকর হবে।
বিএসইসি কর্মকর্তারা বলছেন, এখন থেকে বিনিয়োগকারীদের আর দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হবে না বা জটিল আইনি প্রক্রিয়ায় যেতে হবে না। ফলে বিরোধ নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া হবে আরও দ্রুত, স্বচ্ছ ও বিনিয়োগ বান্ধব।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, এই উদ্যোগ পুঁজিবাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনতে বড় ভূমিকা রাখবে। পুঁজিবাজারে কার্যকর বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা দীর্ঘদিন ধরেই বিনিয়োগকারীদের দাবি ছিল। নতুন বিধিমালা বাস্তবায়ন হলে বিনিয়োগ পরিবেশ আরও স্থিতিশীল হবে এবং বাজারে অংশগ্রহণ বাড়বে বলে তারা আশা করছেন।