ভুটান বাংলাদেশকে দিয়েছে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির প্রস্তাব

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক বৈঠকে বসেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে |

ভুটান প্রধানমন্ত্রী তোবগে জানান, তাদের দেশ ধর্মীয় পর্যটনকে উৎসাহিত করার পরিকল্পনা করছে। তিনি বলেন, ভুটান তার জলবিদ্যুৎ সম্ভাবনা ভাগ করে নিতে আগ্রহী এবং বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত।

বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষরের জোরালো আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে। একইসঙ্গে, দুই দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর মধ্যে সংযোগ স্থাপনের প্রস্তাবও দিয়েছেন তিনি।

জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ৮০তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক বৈঠকে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী তোবগে এই প্রস্তাব দেন।

আলোচনাকালে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, ভুটানের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ‘গেলেফু মাইন্ডফুলনেস সিটি (জিএমসি)’-কে কুড়িগ্রামের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের (ভুটানের বিনিয়োগকারীদের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে বরাদ্দ করা হয়েছে) সঙ্গে সংযুক্ত করা হলে উভয় দেশই ব্যাপকভাবে লাভবান হতে পারে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস এ প্রস্তাবগুলোকে স্বাগত জানান এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের জন্য সব পথ অন্বেষণ করার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, ‘উন্নত সংযোগ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভুটান তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে এক নতুন স্তরে নিয়ে যেতে পারে।’

ভুটান প্রধানমন্ত্রী তোবগে আরো জানান, তাদের দেশ ধর্মীয় পর্যটনকে উৎসাহিত করার পরিকল্পনা করছে। তিনি উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশের বৌদ্ধ ভিক্ষুরাই তাদের দেশে বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার করেছিলেন। তিনি বলেন, ভুটান তার জলবিদ্যুৎ সম্ভাবনা ভাগ করে নিতে আগ্রহী এবং বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। এছাড়া ভুটান ফাইবার অপটিক সংযোগ স্থাপনে বাংলাদেশের সমর্থনও চেয়েছে।

দুই নেতা রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা করেন। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী নিশ্চিত করেন যে, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘ আয়োজিত পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে ভুটান যোগ দেবে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী তোবগে বলেন, তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ‘সু-শাসনে’ রয়েছে। তিনি অধ্যাপক ইউনূসকে তার ‘রোল মডেল’ হিসেবে উল্লেখ করে তাকে ‘মাই প্রফেসর’ বলে সম্বোধন করেন।

তিনি গত ৯ সেপ্টেম্বর থিম্পুতে নবনির্মিত বাংলাদেশের নতুন চ্যান্সারি ভবনের নকশারও প্রশংসা করেন। নকশাটি ‘হিমালয়ের পাদদেশে বঙ্গোপসাগর’ থিমে তৈরি।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। শেরিং তোবগে এ আমন্ত্রণ গ্রহণ করে জানান, বাংলাদেশের আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্ধারিত সাধারণ নির্বাচনের আগেই তিনি হয়তো এ সফর সম্পন্ন করবেন।

সম্পর্কিত খবর