পক্ষাঘাতগ্রস্ত স্ত্রীকে ‘জীবন্ত কবর দেওয়ার চেষ্টা’

শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলায় পক্ষাঘাতগ্রস্ত শয্যাশায়ী স্ত্রীকে জীবন্ত কবর দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের খোশালপুর কানিপাড়া বাজার সংলগ্ন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগীর নাম খোশেদা বেগম (৭০)। অভিযুক্ত স্বামী মো. খলিলুর রহমান (৮০) খোশালপুর মধ্যপাড়ার বাসিন্দা।
ভিডিওতে দেখা যায়, খলিলুর রহমান স্ত্রীকে ঘর থেকে টেনে উঠানে নিয়ে যান। এর আগে তিনি উঠানের এক পাশে কোদাল দিয়ে ছোট গর্ত খুঁড়ে রাখেন। খোশেদাকে বের করার পর সেই গর্তে রেখে তার উপর কোদাল দিয়ে মাটি চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। অসুস্থ খোশেদা প্রাণপণ চিৎকার করছেন। স্বামী তার মুখে থাপ্পড় দিচ্ছেন। আশপাশে কিছু মানুষ দাঁড়িয়ে থাকলেও কেউ সাহায্যে এগিয়ে আসেননি। এক পর্যায়ে খলিলুর নিজেই স্ত্রীকে ফেলে চলে যান।
খোশেদা নাতি মো. খোকন (১৯) তার মোবাইলে ভিডিওটি ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে পোস্ট করেন বলে দাবি প্রতিবেশীদের। পরবর্তীতে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর এ নিয়ে শুরু হয় নানা আলোচনা-সমালোচনা।
প্রতিবেশীরা জানান, প্রায় ছয় বছর ধরে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে শয্যাশায়ী খোশেদা বেগম। স্বামী চিকিৎসা করিয়েছিলেন, তবে কোনো ফল হয়নি। দীর্ঘদিনের সেবাযত্নে ক্লান্ত হয়ে খলিলুর রহমান এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে তাদের ধারণা।
প্রতিবেশী রহিম মিয়া বলেন, “খলিল কাকা আসলে খারাপ লোক না। সবার সঙ্গে হাসিখুশি হয়ে চলেন তিনি। তবে স্ত্রীর অসুস্থতার পর থেকে তার মন খারাপ থাকে। তবে তিনি এমন কাণ্ড কেন ঘটালেন বুঝতে পারছি না।”
প্রতিবেশী সুজন মিয়া বলেন, “খলিলুর রহমান স্ত্রীর জন্য একটি চেয়ার ও কমোড কিনে এনেছিলেন। স্ত্রী চোখে ভালো দেখেন না, কথা না শোনায় আজকের ঘটনাটি ঘটেছে। নাতির ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করায় বিষয়টি সবার নজরে এসেছে।”
শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার জাহিদ বলেন, “ভিডিও দেখার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। বিষয়টি সামাজিকভাবে সমাধান হওয়ার কথা শুনেছি। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”