ইসলামী ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের একীভূতকরণে দ্বিমত

একীভূতকরণ না করে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পরিচালনার জন্য সরকারের কাছ থেকে অর্থ সহায়তা চান ব্যাংকটির উদ্যোক্তা পরিচালকরা। অন্য রুগ্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যাংকটি একীভূতকরণের বিরোধিতাও করেছেন তারা।

৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ব্যাংকের সাবেক কয়েকজন পরিচালক।

লিখিত বক্তৃতায় ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান ডা. মেজর (অব.) এম রেজাউল হক বলেন, মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে এ ব্যাংক দখল করা হয়েছিল। এখন আবার সরকারি খাতে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমাদের অপরাধ কী? কোনোভাবেই আমাদের ব্যাংক নেওয়া যাবে না। আমরা আদালতে রিট করেছি, সেই রিটের নিস্পত্তি করে আসতে হবে। অন্যদের হাতে দেওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তা পরিচালকদের সঙ্গে কোনো আলাপ-আলোচনা ও বৈঠক না করেই এস আলমের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ও লুটকৃত কতিপয় রুগ্ন ব্যাংকের সঙ্গে অযৌক্তিকভাবে একীভূত করার চেষ্টা করছে। যা ব্যাংকের সব গ্রাহক ও বিনিয়োগকারীর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হবে। ব্যাংকটিকে একীভূতকরণ না করে পরিচালনার দায়িত্ব যদি প্রকৃত উদ্যোক্তা ও এর শেয়ারহোল্ডারদের হাতে ন্যস্ত করা হয়, তাহলে খুব দ্রুত সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্বিক সহযোগিতায় সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক তার গ্রাহকের আস্থা পুনরায় ফিরিয়ে আনতে পারবে এবং ব্যাংকের আর্থিক দুরবস্থা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াবে এবং বাণিজ্যিকভাবে পুনরায় একটি লাভজনক ও সফল ব্যাংকে রূপান্তরিত হবে।

ব্যাংকটির উদ্যোক্তা চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ীরা ব্যাংক চালাতে না পারলে অন্যরা পারবে কিভাবে। আমরাই এই ব্যাংক চালাব। এটা আমাদের সম্পদ। সরকার কি একজনের বাড়ি-ঘর নিয়ে নিতে পারে?

সাবেক পরিচালক আসাদুজ্জামান বলেন, অনেক কষ্ট করে আমরা এ ব্যাংক করেছি। প্রবাস থেকে দেশে অর্থ এনে এটা প্রতিষ্ঠা করেছি। এখন সরকারিকরণ করা হবে কেন?

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের সাবেক পরিচালক ডা. মো. জাহাঙ্গীর বলেন, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পরিচালনায় যত টাকা লাগে, বাংলাদেশ ব্যাংককে দিতে হবে। আমরা ব্যবসা করে পরে ফেরত দেব। পাঁচ ব্যাংক একীভূতকরণে সরকারি উদ্যোগের বিরোধিতা করেন তিনি।

শরীয়াহভিত্তিক পরিচালিত দুর্দশাগ্রস্ত স্যোশ্যাল ইসলামী, এক্সিম, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, ইউনিয়ন ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক একীভূত করে একটি বড় ইসলামী ব্যাংক করা হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একীভূতকরণ উদ্যোগে এরই মধ্যে সায় দিয়েছে সরকার। এজন্য প্রাথমিকভাবে দরকার হবে ৩৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা; যার মধ্যে সরকার দিচ্ছে ২০ হাজার ২০০ কোটি টাকা। আর ৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা নেওয়া হবে আমানত বীমা ট্রাস্ট তহবিল থেকে। বাকি ৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীদের শেয়ার দেওয়া হবে।

সম্পর্কিত খবর