স্বাস্থ্যবিধি যেন কোথাও নেই

দেশের রাস্তাঘাট, হাট-বাজার, অফিস-আদালতসহ কোথাও এখন স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। বাস, লঞ্চ ও ট্রেনে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা ও মাস্ক ব্যবহারে উদাসীন অনেক যাত্রী। করোনা শনাক্তের হার কিছুটা কমে আসায় সাধারণ মানুষের ভীতি প্রায় কেটে গেছে। সবকিছুই যেন স্বাভাবিক।

গত কয়েক দিন ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ পথচারীর মুখে মাস্ক নেই। কেউ কেউ মুখের থুতনিতে মাস্ক নামিয়ে চলাফেরা করছেন। অধিকাংশ গণপরিবহন আসনের অতিরিক্ত যাত্রী দাঁড়িয়ে নিচ্ছে। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারে দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর কোনও তৎপরতা লক্ষ করা যায় না।

গণপরিবহন সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, করোনা পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। রাস্তাঘাটে মানুষের উপস্থিতি লক্ষণীয়। কিন্তু যাত্রীদের মধ্যে কোনও সচেতনতা নেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আগের মতো মানুষকে বাধা দিচ্ছে না।

কমলাপুর স্টেশনে অনেকটা ঢিলেঢালাভাবে প্রবেশ করতে দেখা যায় যাত্রীদের। ট্রেনের ভেতরে অনেকেই মাস্ক খুলে বসে থাকেন। রেলস্টেশনের প্রবেশপথে নেই আগের মতো কঠোরতা।

তবে কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার  বলেন, ‘আমরা কোনও যাত্রীকে মাস্ক ছাড়া স্টেশনে ঢুকতে দিচ্ছি না। কমলাপুরে প্ল্যাটফর্মে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। চারদিকে আমাদের নিরাপত্তাকর্মীরা সারাক্ষণ দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। তবে প্রত্যেক যাত্রীকে তো আর সারাক্ষণ পাহারা দেওয়া সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে মানুষকে নিজেদেরই সচেতন হওয়া প্রয়োজন।’

একই চিত্র সদরঘাটে। নদী টার্মিনালে আসা বা ছেড়ে যাওয়া প্রায় সব লঞ্চে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করছেন যাত্রীরা। আগের মতো লঞ্চে প্রবেশের সময় হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক ব্যবহারের দৃশ্য চোখে পড়ে না। এখন গাদাগাদি করেই যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে।

নগরীতে যত আসন তত যাত্রী ভিত্তিতে গণপরিবহন পরিচালনা করার কথা থাকলেও এখন দাঁড়িয়ে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। এ কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা হচ্ছে না। তাছাড়া অধিকাংশ যাত্রীর মুখে মাস্ক থাকে না।

যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মুজাম্মেল হক চৌধুরী স্বীকার করেছেন, করোনা পরিস্থিতি কিছুটা কমে আসায় যাত্রীরা যেমন অসচেতন হয়ে পড়েছেন, তেমনি পরিবহন মালিকদের মধ্যে অবহেলা দেখা দিয়েছে। আসন পূর্ণ হওয়ার পরও যাত্রী তোলা হচ্ছে বাসে। তার আশঙ্কা, ‘এভাবে চলতে থাকলে করোনার সংক্রমণ আবারও বেড়ে যেতে পারে।’

ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, ‘আমরা যত আসন তত যাত্রীর ভিত্তিতে গণপরিবহন পরিচালনার জন্য মালিকদের জানিয়ে দিয়েছি। যারা সরকারের এই নির্দেশনা অমান্য করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যবস্থা নেবে।’