সৌদির নাগরিকত্ব পেলেন কাবা শরিফের ক্যালিগ্রাফার বাংলাদেশি মুকতার

সৌদি আরব এক রাজকীয় ফরমান জারির মাধ্যমে দেশটির নাগরিকত্ব দিয়েছেন এক বাংলাদেশিসহ ৫ বিদেশিকে। চট্টগ্রাম মুকতার আলিম তাদের একজন। আশার্ক আল আওসাত সংবাদ পত্রের বরাতে সৌদি গেজেট জানায়, ধর্মীয়, ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক, চিকিৎসা, বিনিয়োগ ও প্রযুক্তিবিদ্যায় পারদর্শীদের পর্যায়ক্রমে এ নিয়োগ দেওয়া হবে।

গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) এক রাজকীয় ফরমানের মাধ্যমে পবিত্র কাবা শরিফের (কিসওয়ার) প্রধান ক্যালিগ্রাফার (প্রচ্ছদ শিল্পী) বাংলাদেশের চট্টগ্রামের সন্তান মুকতার আলিম প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে সৌদি আরবের নাগরিকত্ব লাভ করেন। আরও যারা নাগরিকত্ব পেয়েছেন, তারা হলেন- ইতিহাসবিদ ড. আমিন সিদো ও ড. আব্দুল কারিম আল-সাম্মাক, প্রখ্যাত গবেষক ড. মোহাম্মাদ আল-বাকাই এবং প্রখ্যাত নাট্যশিল্পী সামান আল-আনি।

এ ছাড়াও ধর্মীয়, চিকিৎসা, শিক্ষা, বিনিয়োগ, প্রযুক্তিবিদ্যা এবং ক্রীড়ার ক্ষেত্রের বেশ কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তিকেও নাগরিকত্ব দিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে যারা নাগরিকত্ব পেয়েছেন-

১. মুকতার আলিম (বাংলাদেশ)
মুকতার আলিম বর্তমানে পবিত্র কাবা শরিফের গিলাফের প্রধান ক্যালিগ্রাফার হিসেবে কর্মরত আছেন। তার আঁকা ক্যালিগ্রাফিগুলো আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে। তিনি উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ক্যালিগ্রাফি শিল্পে তিনি গবেষণা করেছেন। এ কাজে তিনি অনেক পুরষ্কারও পেয়েছেন।

মুকতার আলিম চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া উপজেলার আধুনগর ইউনিয়নের রশীদের ঘোনা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মুফিজুর রহমান বিন ইসমাঈল শিকদার। মা শিরিন বেগম। তারা চার ভাই ও এক বোন। বর্তমানে মুকতার তার মা, স্ত্রী ও চার মেয়েকে নিয়ে পবিত্র নগরী মক্কাতেই বসবাস করছেন।

২. ড. আমিন সিদো
ঐতিহাসিক কাজে ড. আমিন সিদোকে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়। ইতিহাসি বিষয়ে তিনি ৩০টির বেশি গবেষণা গ্রন্থ লিখেছেন। তিনি কিং ফাহাদ জাতীয় গ্রন্থাগারে কাজ করতেন। এ গ্রন্থাগার থেকে প্রকাশিত একটি ম্যাগাজিনের তিনি সম্পাদনা করেন। এখন তিনি ইতিহাস নিয়ে কজ করছেন।

৩. ড. মুহাম্মদ আল-বেকাই
তিনি একজন বিশিষ্ট গবেষক, ইতিহাসবিদ এবং অনুবাদক। তিনি বিভিন্ন শিল্পকলায় ৪০টির বেশি বই লিখেছেন। তিনি রিয়াদে কিং সৌদ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভাষতত্ব ও সমালোচনামূলক সাহিত্যের অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি বর্তমানে কিং সালমান সেন্টার ফর দ্য হিস্টোরিক্যাল অ্যান্ড সিভিলাইজেশন স্টাডিজ অব দ্য পেনিনসুলায় কাজ করছেন। ২০১৮ সালে তিনি অনুবাদ কর্মের জন্য কিং আব্দুল্লাহ আন্তর্জাতিক পুরষ্কার পেয়েছেন।

৪. ড. আব্দুল কারিম আল-সাম্মাক
আধুনিক সময়ে সুপরিচিত ইতিহাসবিদ ড. আব্দুল কারিম আল-সম্মাক। তিনি সৌদি আরবের রাষ্ট্রনায়কদের ইতিহাসের উপর প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে অনুবাদের কাজ করছেন।

৫. সামান আল-আনি
সামান আল-আনি সৌদি আরবের থিয়েটার আর্টের অন্যতম পথিকৃৎ। তিনি ১৯৭০ সালে বাগদাদ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তারপর থেকে তিনি সৌদি আরবের থিয়েটারের কাজে যোগদান করেন। তার পরিচালিত ‘দ্য ট্রেন অফ ফরচুন’ নাকটটি প্রথম সৌদি থিয়েটার কাজ হিসেবে গণ্য করা হয়। তিনি অনেক আন্তর্জাতিক থিয়েটারের কাজে যোগদান করেছেন। তার কাছে সৌদি আরবের অনেক অভিনেতা অভিনয় শিখেছেন।