মোমিনুল আজম:
ইকো সিস্টেম বা বাস্ততন্ত্র অনুযায়ী আমাদের অতি পরিচিত মানিপ্লান্ট ঘরের ভিতর পজেটিভ এনার্জি সরবরাহ করে ফলে নেগেটিভ এনার্জি দুরীভূত হয়। এটিকে সৌভাগ্যদায়ী গাছ হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। জ্যোতিষবিদ্যাতেও এমনটি বলা আছে যে এ গাছ গৃহে সুখ সমৃদ্ধি আনয়ন করে। একটি চাইনিজ মিথ এ বলা আছে যে ঘরে মানি প্লান্ট আছে সে ঘরের আয় ভাল হয় এবং আয়ের অনেক পথ খুলে যায়। এসব কারনে ঘর সাজানোর উদ্ভিদ হিসেবে এটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এই জনপ্রিয়তার অবশ্য বৈজ্ঞানিক ভিত্তিও আছে।
নাসার বিশুদ্ধ বায়ু সংক্রান্ত এক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, বদ্ধস্থানে এ গাছ রাখা হলে তা বায়ুর ভিতর ক্ষতিকর উপাদান যেমন বেনজিন, টলুইন, জাইলিন, কার্বন মনোঅক্সাইড, ফরমালডিহাইড শোষণ করে বায়ুকে বিশুদ্ধ রাখে। আমরা এও জানি বাইরের বাতাসের চেয়ে ঘরের ভিতর যে বাতাস, তা ততোটা বিশুদ্ধ নয়। বায়ু চলাচলের সীমাবদ্ধতা এবং শীততাপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের কারনে ঘরের ভিতর আর্দ্রতা কমে যায়, এর ফলে আমাদের চামড়া শুষ্ক হয়ে পড়ে। তখন ভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে গিয়ে ঠান্ডা, জ্বর এবং অ্যালার্জিজনিত বিভিন্ন চর্মরোগের সংক্রমণ বেড়ে যায়। নাসার গবেষণায় এটাও বলা হয়েছে যে মানিপ্লান্ট বাতাসের আর্দ্রতা সংরক্ষণ করে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এসব কারনে তারা মহাকাশযানে এ গাছটি রাখার সুপারিশ করেছে।
এই যে ঘর সাজানোর গাছটিকে আমরা মানিপ্লান্ট বলি এটি কিন্তু বিশ্বব্যাপী বহুল ব্যবহৃত নাম নয়। ভারতীয় উপমহাদেশেই এ লতানো গাছটিকে এ নামে আমরা বেশি চিনি। বিশ্বব্যাপী সর্বাধিক পরিচিত এটি ‘Pothos’ নামে। বৈজ্ঞানিক নাম Epipremnum aureum . এটি golden pothos এবং devil’s ivy নামেও পরিচিত। এটিকে ডেভিলস আইভি বলার কারন এই যে এটিকে প্রায় ধ্বংস করা অসম্ভব। শুধুমাত্র পাতার রং আর গঠনের ভিত্তিতে বেশ কয়েক ধরনের মানিপ্লান্ট পাওয়া যায়।
ইট কাঠের দেয়ালের ভিতর একটুকরো সবুজের আবেশ মনে শান্তির পরশ বুলিয়ে দেয়। তাই আপনার ঘরেও মানিপ্লান্ট স্থান হোক। সুস্থ্য শরীর, সুখ সমৃদ্ধি, অর্থবিত্তে ভরে উঠুক আপনার ঘর। এটির রক্ষণাবেক্ষণ, বংশবিস্তার খুবই সহজ।
একটি প্লাস্টিক অথবা গ্লাস জারে পানি ভরে এর ডাল কেটে রেখে দিতে পারেন। দু’এক সপ্তাহেই শিকড় গজিয়ে যাবে। তবে এ গাছের দ্রুত বৃদ্ধির জন্য সুন্দর টবে মাটি ভরে রোপন করে রেখে দিন ঘরের এককোণায়। সপ্তাহে একদিন পানি দিতে পারেন। মাসে একবার পানির সাথে মেশানো ফার্টিলাইজার। ঘরের ভিতর গাছের পাতায় ডাষ্ট জমে। মাঝে মাঝে পাতাগুলো ভেজানো টিস্যু পেপার দিয়ে মুছে দিন। গাঢ় সবুজের আভায় চকচক করবে ঘরের কোনা।
-ফেসবুক থেকে নেয়া।