টানা তিনদিন সাত হাজারের নিচে ছিল দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স। তবে গতকাল আবারো সাত হাজার ছাড়িয়েছে সূচকটি। এদিন এক্সচেঞ্জটির সব সূচকেই উত্থান হয়েছে। বেড়েছে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদরও। তবে সূচক বাড়লেও কমেছে লেনদেন। দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও সূচক ও লেনদেন দুটোই বেড়েছে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ার কেনার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর দ্বিতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদনে ভালো আয় ও মুনাফা শেয়ার কিনতে আগ্রহী করছে। যার প্রভাবে সূচকে উত্থান হয়েছে।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, গতকাল লেনদেনের শুরু থেকেই সূচকে পয়েন্ট যোগ হতে থাকে। এরপর কিছুটা নিম্নমুখী হয়। ফের সূচকটি ঊর্ধ্বমুখী হওয়া শুরু করলে একপর্যায়ে প্রায় ৬০ পয়েন্ট যোগ হয়। এর পরেই শেয়ার বিক্রির চাপে পয়েন্ট কমতে থাকে। শেষ পর্যন্ত গতকাল দিনশেষে ১৯ পয়েন্ট বেড়ে ৭ হাজার ১৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে ডিএসইএক্স, যা আগের কার্যদিবসে ছিল ৬ হাজার ৯৯৮ পয়েন্টে। গতকাল সূচকের উত্থানে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, ফরচুন সুজ, ব্র্যাক ব্যাংক, রবি আজিয়াটা, রিং শাইন টেক্সটাইল ও বিকন ফার্মার শেয়ার।
ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল দিনশেষে প্রায় ৬ দশমিক ৫০ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৫০৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের দিন শেষে যা ছিল ১ হাজার ৪৯৭ পয়েন্টে। ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ দিনের ব্যবধানে ৪ পয়েন্ট বেড়ে গতকাল ২ হাজার ৫৯৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের দিন শেষে যা ছিল ২ হাজার ৫৮৮ পয়েন্টে।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা। এর আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৮১টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিনশেষে দর বেড়েছে ২০৪টির, কমেছে ১২৬টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৫১টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।
খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে বিবিধ খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ দখলে নিয়েছে প্রকৌশল খাত। ১২ দশমিক ৪ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ওষুধ ও জ্বালানি খাত। চতুর্থ অবস্থানে থাকা বস্ত্র খাতের দখলে ছিল লেনদেনের ৯ দশমিক ৯ শতাংশ। জীবন বীমা খাতের দখলে ছিল মোট লেনদেনের ৬ দশমিক ৯ শতাংশ। গতকাল চামড়া খাতে সবচেয়ে বেশি ৩ দশমিক ৬ শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। অন্যদিকে নেতিবাচক রিটার্নের শীর্ষে ছিল সিরামিক খাত, ২ দশমিক ৫ শতাংশ।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ সিকিউরিটিজ ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড, বিএসসি, ফরচুন সুজ, ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস, বিবিএস, আরএকে সিরামিকস, ন্যাশনাল পলিমার, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, ইউনিয়ন ব্যাংক ও কুইন সাউথ।
সিএসইতে গতকাল সিএসসিএক্স সূচক দিনের ব্যবধানে প্রায় ২৪ পয়েন্ট বেড়ে ১২ হাজার ৩৫৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল ১২ হাজার ৩৩০ পয়েন্টে। সিএসইর সব শেয়ারের সূচক সিএএসপিআই গতকাল ৪৩ দশমিক ৬০ পয়েন্ট বেড়ে ২০ হাজার ৫৬৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল ২০ হাজার ৫২৩ পয়েন্টে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ৩০৫টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৭০টির, কমেছে ১০১টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৩৪টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে মোট ৫৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৪৭ কোটি ২৬ লাখ টাকা।