শুরু থেকেই আমাকে আবেদনময়ী হিসেবে দেখানো হয়েছে,অভিনেত্রী হিসেবে নয়: স্কারলেট

হলিউডের সিনেমায় অভিনয় করতে এসে অনেকে হারিয়েও যান। কিন্তু সেখানে জায়গা পেতে খুব বেশি সময় লাগেনি তাঁর। ২০০৩ সালেই অভিনেত্রী স্কারলেট জোহানসনকে সাফল্যের লালগালিচা পেতে দিয়েছিল হলিউড। সে বছর ‘লস্ট ইন ট্রান্সলেশন’ সিনেমার কল্যাণে নিউইয়র্কে জন্ম নেওয়া এই স্বর্ণকেশী পুরো পৃথিবীতে সারা ফেলে দিয়েছিলেন। ওই ছবিতে রহস্যময়ী তরুণী স্কারলেটকে মানিয়েছিল বেশ। তারপর একে একে হলিউডে পার করেছেন প্রায় ২১ বছর।

দর্শক-সমালোচকের মন জিতে নিয়ে স্কারলেট জোহানসন এখন বড় পর্দার অন্যতম একজন। হলিউডের সীমা ছাড়িয়ে অন্য দেশের দর্শকরাও চিনেছেন। বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনিনির্ভর সিনেমায় এ প্রজন্মের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। একসময় যে মেয়েটির অবয়ব শুধু বোকা বোকা হাসি আর লাজুক চাহনিতে সীমাবদ্ধ ছিল, তাঁরই চোখে-মুখে এখন জ্বলজ্বলে লড়াকু অভিব্যক্তির অদম্য প্রকাশ।

স্কারলেটের বয়স এখন ৩৯। বহুবার বিশ্বের সেরা প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের তালিকায় নাম উঠেছে তাঁর। পারিশ্রমিক পাওয়ার দৌড়ে হলিউডের নারী তারকাদের মধ্যে সবাইকে টপকে গেছেন অনেক আগেই। এ অভিনেত্রীর নতুন ছবি ‘ফ্লাই মি টু দ্য মুন’ মুক্তি পাচ্ছে আগামীকাল। গ্রেগ বারলান্টি পরিচালনায় এ সিনেমায় স্কারলেটের সহশিল্পী চ্যানিং টাটাম, উডি হ্যারেলসন, রে রোমানো, জিম রাশ, আনা গার্সিয়া, ডোনাল্ড এলিস ওয়াটকিন্স, নোয়া রবিন্স, কলিন উডেল, ক্রিশ্চিয়ান জুবের, নিক ডিলেনবার্গ প্রমুখ।

সিনেমার গল্প ‘অ্যাপোলো ১১’-এর চন্দ্রঅভিযান নিয়ে। প্রকাশ হওয়া সিনেমার ট্রেলারে দেখানো হয়েছে তৎকালীন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট অ্যাপোলো ১১-এর মিশন নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন। সেই সময় মিশনটি নিয়ে তিনি ভেবেছিলেন, কিছু ভুল হবে এবং আমেরিকা রাশিয়ানদের তুলনায় বিশ্বে তার অবস্থান হারাবে। যে কারণে মিশনটির একটি ব্যাকআপ প্ল্যান করা হয়। জোনসকে ব্যাকআপ হিসেবে একটি নকল চাঁদে অবতরণের দৃশ্য চিত্রায়ণের নির্দেশ দেওয়া হয়, অন্যদিকে অ্যাপোলো ১১-এর কাউন্টডাউন সত্যিই শুরু হয়… এই ছবিটি ঐহিহাসিক রোমান্টিক কমেডির মর্যাদা পাবে কিনা বলা কঠিন। তবে এ ছবি স্কারলেটকে আরও অনেক দূর এগিয়ে দেবে এটা বলা যায়। কারণ সিনেমায় স্কারলেটের ষাটের দর্শকের সাজ এবং অভিনয় দারুণ করেছেন।

অভিনয় দেখাতে এসেছিলেন কিন্তু হলিউড তাঁর রূপেই মজে রইল, গুণ দেখল না– এমন আক্ষেপ প্রায়ই করেন স্কারলেট। দু’বার অস্কার মনোনয়ন পাওয়া এ অভিনেত্রী হলিউডে ‘সুন্দরী’ বলে পরিচিত। তাঁর অভিনয়ও সমালোচকদের প্রশংসা পেয়েছে। কিন্তু সিনেমায় ইন্ডাস্ট্রিতে প্রায় ৩০ বছর কাটিয়ে দেওয়ার পরও স্কারলেটের দুঃখ, তিনি যেমন ছবিতে কাজ করতে চেয়েছিলেন, যে ধরনের অভিনয় করতে চেয়েছিলেন, সেই সুযোগ তিনি এখনও পাননি। কারণ হলিউড প্রথম থেকেই তাঁকে সুন্দরীর প্রতিমূর্তি হিসেবে দেখে এসেছে। তাঁর কাছে মূলত তেমন চরিত্রেই অভিনয়ের প্রস্তাব এসেছে, যেখানে তাঁর রূপের ব্যবহার করা হবে। এক সাক্ষাৎকারে ‘ব্ল্যাক উইডো’ খ্যাত এ অভিনেত্রী জানিয়েছেন, ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই তাঁকে আবেদনময়ী হিসেবে দেখানো হয়েছে। অভিনেত্রী হিসেবে নয়।

জানা গেছে, ‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড’ ফ্র্যাঞ্চাইজির পরের সিনেমায় থাকছেন হলিউডের এ অভিনেত্রী। গত সোমবার নতুন সিনেমার প্রচারে এসে নিজেই নিশ্চিত করেছেন এ খবর। গারেথ এডওয়ার্ড পরিচালিত নতুন ছবির নাম এখনও ঠিক হয়নি। ছবি প্রসঙ্গে অভিনেত্রী জানিয়েছেন, তিনি সবসময়ই এ ফ্র্যাঞ্চাইজির অংশ হতে চেয়েছেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি ১০ বছর ধরে এ ফ্র্যাঞ্চাইজিতে কাজ করার জন্য সব চেষ্টা করে গিয়েছি। এমনকি সেটা যদি প্রথম পাঁচ মিনিটের মধ্যে মৃত্যু ঘটে যায় এমন চরিত্রও হয়, তবুও। আমি জুরাসিক ওয়ার্ল্ডের বড় ভক্ত।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটি আমার হলে দেখা প্রথম দিকের ছবিগুলোর মধ্যে একটি। খুব ভালোভাবেই মনে আছে। আমার জীবন বদলে দিয়েছিল, মন ভরিয়ে দিয়েছিল। আমি কতটা এক্সাইটেড তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।’

জানা গেছে, ছবির স্ক্রিপ্ট লিখেছেন ডেভিড কোয়েপ। জোহানসন জানিয়েছেন, ‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড’-এর চতুর্থ কিস্তির স্ক্রিপ্ট অসাধারণ হয়েছে। প্রথম তিন কিস্তির থেকে একেবারেই আলাদা হতে চলেছে এটি। জানা গেছে, ‘জুরাসিক ওয়ার্ড ফোর’-এর শুটিং হবে থাইল্যান্ডে। এ ছাড়াও মাল্টা এবং যুক্তরাজ্যের স্টুডিওতে কিছু দৃশ্য ধারণ করা হবে।

এন এস