রোহিঙ্গা হত্যাকান্ড: ব্রাশফায়ারের পর কুপিয়ে হত্যা

 

থমথমে পরিস্থিতি, আতংক আর ভয় বিরাজ করছে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে।  উখিয়ার ১৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল ইসলামিয়া মাদ্রাসা মসজিদে হামলায় ৬ জন নিহত হয়েছে।  হামলায় আহত হয়েছে অন্তত ১১ জন। ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্যর পাশাপশি মোতায়েন করা হয়েছে।সেনাসদস্যদের।

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে প্রত্যক্ষদর্শী একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘হামলাকারীদের মুখ কাপড় ও মাস্ক দিয়ে ঢাকা ছিল।  কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই গুলি ছোড়ে ওরা। পরে গুলিবিদ্ধ কয়েকজনকে লম্বা কিরিচ দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এতে কারও আঙুল, কারও হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। গুলি করে ও কুপিয়ে চলে যায় তারা ‘

এপিবিএন-৮-এর অধিনায়ক শিহাব কায়সার খান বলেন, ‘কী কারণে এই হামলা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকজনকে শনাক্ত করা গেছে। অস্ত্রসহ আটক মুজিবুরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’

কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হামলায় প্রাণহানির পর থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সবার মধ্যে। ভয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতে রাজি হচ্ছে না কেউ।

পুলিশ বলছে, ক্যাম্পে হামলার ঘটনায় শুরুতে ৭ জন নিহতের তথ্য তারা গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল। তবে এখন পর্যন্ত তারা ৬ জনের মরদেহ পেয়েছে।

নিহতরা হলেন উখিয়ার বালুখালী-২ রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ইদ্রিস আলী, বালুখালী-১-এর ইব্রাহীম হোসেন, ১৮ নম্বর ক্যাম্পের এইচ ব্লকের বাসিন্দা নুরুল ইসলামের ছেলে আজিজুল হক, আবুল হোসেনের ছেলে মো. আমীন, মোহাম্মদ নবীর ছেলে নুরুল আলম ওরফে হালিম এবং রহিম উল্লার ছেলে হামিদ উল্লাহ।

মাদ্রাসা মসজিদে অবস্থানরতদের ওপর শুক্রবার ভোর সোয়া ৪টার দিকে প্রথমে গুলি চালায় ৮-১০ জন দুর্বৃত্ত। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করেতে গুলিবিদ্ধদের কোপানো হয়। এতে অনেকের হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

আহতদের মধ্যে ঘটনাস্থলে চারজন এবং হাসপাতালে নেয়ার পর আরও দুজনের মৃত্যু হয়।

ক্ষতিগ্রস্থরা মনে করছেন, ক্যাম্পে এই হত্যাযজ্ঞের সঙ্গে রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ খুনের যোগসাজশ থাকতে পারে। মাদ্রাসা ও মসজিদসংশ্লিষ্ট রোহিঙ্গা নেতারা ক্যাম্পে নানা অপরাধে জড়িতদের শনাক্ত ও ধরিয়ে দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিভিন্ন সময় সহায়তা করেছেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ত্রাসীরা এই বর্বর হামলা চালাতে পারে।

রোহিঙ্গা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে দিন দিন হত্যা, মাদক কারবার বেড়ে চলেছে। এগুলো ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টরা। আমরা এর আগেও দেখেছি রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা স্থানীয়দের তুলে নিয়ে হত্যা করেছে।’

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ঘটনাস্থলে পুলিশের একাধিক টিম পাঠানো হয়েছে। তবে কারা এ হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে তা স্পষ্ট নয়। আমরা তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।