রেকিট বেনকিজারের আয় কমেছে ৬ শতাংশ

গত বছর দেশে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষের মধ্যে ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী ব্যবহারের প্রবণতা বেড়ে গিয়েছিল। এতে সে সময় এসব পণ্যের বাড়তি চাহিদা তৈরি হয়। ফলে ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী উৎপাদনকারী তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানি রেকিট বেনকিজার বাংলাদেশ গত বছর এসব পণ্য বিক্রি করে ভালো ব্যবসা করেছিল। তবে কভিড পরিস্থিতি বর্তমানে অনেকাটাই স্বাভাবিক হয়ে আসার কারণে এ বছর ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রীর চাহিদা কমে গেছে। এতে চলতি ২০২১ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) রেকিট বেনকিজারের আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৬ শতাংশ কমে গেছে।

রেকিট বেনকিজারের তৃতীয় প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, এ সময়ে কোম্পানিটির আয় হয়েছে ১৩০ কোটি টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে আয় হয়েছিল ১৪৫ কোটি টাকা। চলতি হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ২০ কোটি টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে নিট মুনাফা ছিল ১৬ কোটি টাকা। তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৪৩ টাকা ১৭ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৩৩ টাকা ৯৩ পয়সা।

এদিকে চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির আয় হয়েছে ৩৮০ কোটি টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে আয় হয়েছিল ৪০৩ কোটি টাকা। চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৪৯ কোটি টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে নিট মুনাফা ছিল ৪৩ কোটি টাকা। তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১০৫ টাকা ২০ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৯১ টাকা ৪৪ পয়সা। এ বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৩৬ টাকা ১৫ পয়সায়।

আয় কমে গেলেও মুনাফা বাড়ার কারণ হিসেবে কোম্পানিটির কর্মকর্তারা বলছেন, গত বছর করোনার কারণে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় তারা বিপণন ও বিজ্ঞাপন খাতে বেশি অর্থ ব্যয় করেছিল। কিন্তু এ বছর কভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসার কারণে পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়ায় এসব খাতে ব্যয়ও কমে গেছে। এতে চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানির পরিচালন ব্যয় কমেছে ৯ শতাংশ। ব্যাংকের সুদের হার কমে যাওয়ার কারণে এ সময়ে কোম্পানিটি আর্থিক আয় কমেছে ৭৩ শতাংশ। তবে ব্যবসা থেকে আয় ও আর্থিক আয় কমে যাওয়া সত্ত্বে পরিচালন আয় কমার পাশাপাশি আড়াই শতাংশ হারে করপোরেট কর হ্রাসের প্রভাবে কোম্পানির মুনাফা বেড়েছে।

রেকিট বেনকিজারের প্রধান দুটি ব্র্যান্ড হচ্ছে ডেটল ও হারপিক। পাশাপাশি লাইজল ব্র্যান্ডের পণ্যও রয়েছে কোম্পানিটির। বাজারে ডেটল ব্র্যান্ডের সাবান, লিকুইড হ্যান্ডওয়াশ, লিকুইড অ্যান্টিসেপটিক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার রয়েছে। আর লাইজল ব্র্যান্ডের লিকুইড ক্লিনার ফ্লোর জীবাণুমুক্ত করার কাজে ব্যবহূত হয়।

২০২০ হিসাব বছরে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ১ হাজার ৪০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে।

ডিএসইতে গতকাল রেকিট বেনকিজারের শেয়ারের সর্বশেষ দর ছিল ৪ হাজার ৮৪০ টাকা।