রেকর্ড ভেঙে তলানিতে ভারতের প্রবৃদ্ধির হার

 

বিগত তিন মাস ধরেই ভারতের অর্থনীতির দুরাবস্থা নিয়ে অনেক আশঙ্কার খবর প্রকাশ হচ্ছিল দেশটির বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। কেননা প্রবৃদ্ধির হার এতটা নিম্নমুখী ছিল যে এখন তা এসে ঠেকেছে তলানিতে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বৃদ্ধির হার নেমে এসেছে ৪ দশমিক ৫ শতাংশে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর জুলাইয়ে সংসদে আর্থিক অবস্থা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন নতুন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তখন পাল্টা বলেছিলেন, ‘কংগ্রেস আমলে অর্থনীতি কেন দ্বিগুণ হয়নি? তখন কেন হিন্দু রেট অব গ্রোথ চাপানো হয়েছিল!’ এবার মোদির আমলেই প্রবৃদ্ধির হার ৪.৫ শতাংশে নেমে আসায় প্রশ্ন উঠছে, ভারত ‘হিন্দু রেট’-এর পথে ফের পা বাড়াচ্ছে কিনা।

স্বাধীনতার পর দীর্ঘ সময় দেশের আর্থিক বৃদ্ধির গড় হার ৩.৫ শতাংশের আশেপাশে ঘোরাফেরা করেছিল। তাকে ব্যঙ্গ করে ‘হিন্দু রেট অব গ্রোথ’ তকমা দিয়েছিলেন অর্থনীতিবিদ রাজ কৃষ্ণ। সেই তকমা জনপ্রিয় হয়েছিল।

বুধবার ভারতের রাজ্যসভায় প্রবৃদ্ধি আরও কমতে পারে ইঙ্গিত দিয়ে নির্মলা বলেছেন ‘এটা মন্দা নয়। কখনোই মন্দা হবে না।’

আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু অক্টোবরে ভারতের আটটি প্রধান পরিকাঠামো ক্ষেত্রের উৎপাদন সরাসরি ৫.৮ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে, অর্থ বছরের প্রথম সাত মাসেই রাজকোষ ঘাটতি ৭.২ লাখ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যা পুরো বছরের আনুমানিক রাজকোষ ঘাটতির পরিমাণের থেকে বেশি।

পত্রিকাটির প্রতিবেদনে এর কারণ হিসেবে বলা হয়, ভারতের অর্থনীতির এই হালের কারণ হলো বাজারে বিক্রিবাটা কমে যাওয়া। কারখানার উৎপাদনে নিম্নমুখী, বেসরকারি নতুন বিনিয়োগের অভাবকেই প্রধান কারণ মানা হচ্ছে আসছে না। রপ্তানিতেও ভাটার টান পড়ায় অর্থনীতির চারটি ইঞ্জিনই কঠিন সমস্যার বেড়াজালে রয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ আজ অর্থনীতির অবস্থাকে ‘গভীরভাবে চিন্তাজনক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মোদি সরকার ক্ষমতায় ফিরে ৫ লাখ কোটি ডলারের অর্থনীতির স্বপ্ন দেখিয়েছিল। কিন্তু গত ছ’বছরে অর্থনীতির অবস্থা এতখানি খারাপ হয়নি।