বিশ্ব নেতাদের জলবায়ু বিষয়ক কপ২৬ শীর্ষ সম্মেলন এবং উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে যোগদান শেষে বুধবার (৩ নভেম্বর) স্থানীয় সময় অপরাহ্নে গ্লাসগো থেকে লন্ডনে এসে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি যে হোটেলটিতে অবস্থান করছেন, তার সামনে আগে থেকেই অপেক্ষা করছিলেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলোর বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী। তাদের নিরাশ করেননি প্রধানমন্ত্রী, ক্লারিজ হোটেল চত্বরে হাত নেড়ে বেশ কিছুক্ষণ শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন তিনি।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পাকিস্তান থেকে মুক্ত হয়ে দেশে যাওয়ার পথে এই হোটেলেই উঠেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেই ঐতিহাসিক হোটেলে বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে পেয়ে উচ্ছ্বসিত বাংলাদেশিরা। তবে তাদের ‘চোখ জুড়ানোর’ আগেই ত্বরায় পড়েন প্রধানমন্ত্রী। বিশ্রাম না নিয়েই ঘণ্টা খানেক পর আরও একটি কর্মসূচির উদ্দেশ্যে হোটেল থেকে বেরিয়ে ছুটতে হয় তাকে।
কর্মসূচি শেষে প্রধানমন্ত্রী যখন ফিরছিলেন, সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত তখন ক্রমেই গভীর হতে চলছে। সাত ডিগ্রি তাপমাত্রায় লন্ডনের সড়কে তখন কনকনে শীত। সব উপেক্ষা করে হোটেলের সামনে নেতাকর্মীরা তখনও অপেক্ষায়। প্রধানমন্ত্রীকে আরেক দফায় স্লোগান আর করতালি দিয়ে স্বাগত জানান তারা। প্রধানমন্ত্রীও দাঁড়িয়ে থেকে হাত নেড়ে সবাইকে শুভেচ্ছা-অভিবাদন জানান। কিছুক্ষণ পরে উঠে যান হোটেল কক্ষে।
এ পর্যন্ত সব স্বাভাবিকই চলছিল। তবে এরপরই ঘটে গেল আশ্চর্যের আরেক ঘটনা। হোটেল রুমে ঢুকেই কল করলেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর ফোনে। বললেন অপেক্ষমাণ সবার সাথে লাইভ কথা বলতে চান তিনি। লাউড স্পিকারে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক সাজিদুর রহমান ফারুক ব্রিটেনের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজারো প্রবাসী বাংলাদেশি ও দলীয় কর্মীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য লাইভ শোনান।
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের অন্যতম নেতা ভিপি খছরুজ্জামান বুধবার মধ্যরাতে এ প্রতিবেদককে বলেন, ব্যস্ত শিডিউলে বাইরে মিটিং থেকে এসেও প্রধানমন্ত্রী দেখলেন, নেতা-কর্মীরা এখনও এই প্রচণ্ড শীতের মধ্যেও রাত জেগে অপেক্ষা করছেন, তখন আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন নেত্রী। নিজের নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙেই বেরিয়ে আসলেন তিনি। বললেন, ‘এই শীতে আর ঠাণ্ডা না লাগিয়ে তোমরা এখনই সবাই বাড়ি যাও।’
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের অন্যতম সহ সভাপতি এম এ রহিম জানান, নেত্রী সমস্ত প্রটোকল উপেক্ষা করে হোটেলের সামনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সকল সংগঠনের নেতাকর্মীর সাথে কুশল বিনিময় করেন।
এ সময় বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানাও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।